সোমবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা
ব্রাসেলসে কনফারেন্স

বাংলাদেশে জনগণের জঙ্গিবাদবিরোধী অবস্থানের প্রশংসা

প্রতিদিন ডেস্ক

ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে কনজারভেটিভ পার্টির পররাষ্ট্রবিষয়ক মুখপাত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক সাব কমিটির সদস্য চার্লস টেনক এমইপি বলেছেন, ‘বাংলাদেশে এখন চলছে আধুনিকতা বনাম মধ্যযুগে ফিরে যাওয়ার লড়াই। এই লড়াইয়ে বিশ্ববাসীকে অবশ্যই মধ্যযুগে ফিরে যাওয়ার পক্ষের অপশক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে।’ বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত ‘থ্রেটেনিং ইমপ্লিকেশন অব দ্য রাইজ অব টেররিজম ইন দ্য নেইম অব ইসলাম ইন বাংলাদেশ : দ্য নিড ফর রেজিস্টেন্স’ শীর্ষক দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এই অভিমত পোষণ করেন। খবর এনআরবি নিউজের। মঙ্গলবার ‘ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ ফোরাম’র উদ্যোগে ব্রাসেলস প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হয় এই কনফারেন্স। উদ্বোধনী সেশনে সভাপতির বক্তব্যে প্রভাবশালী এই ব্রিটিশ রাজনীতিক অবশ্য ধর্মের নামে মধ্যযুগে ফিরে যাওয়ার অপচেষ্টারত শক্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ও জনগণের শক্ত প্রতিরোধের প্রশংসা করেন। চার্লস টেনক বলেন, ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, আহমদিয়া, সেক্যুলার ব্লগার, একাডেমিক ও সাংবাদিকসহ প্রগতিশীল সেক্যুলার মুক্তমনারাই জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের টার্গেট হয়েছেন, গত কয়েক বছরের জঙ্গি কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করলেই আমরা তা দেখতে পাই। তিনি বলেন, বাংলাদেশে যারাই জঙ্গিদের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন তারা সবাই একটি ধর্মনিরপেক্ষ আধুনিক রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেন, যে রাষ্ট্রে ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবাই সমান অধিকার ভোগ করবে, থাকবে পারস্পরিক সহনশীলতা, মুক্ত মতের সুযোগ ও লিঙ্গসমতা।

আর এটি তাদের পছন্দ নয় বলেই মধ্যযুগে ফিরে যেতে আগ্রহী অন্ধকারের সেই অপশক্তি বারবার সেক্যুলার শক্তির ওপর আঘাত হানছে।

গুলশানের হলি আর্টিজান আক্রমণকে ইতিহাসের অন্যতম ভয়ঙ্কর জঙ্গি আক্রমণ উল্লেখ করে চার্লস টেনক বলেন, ইউরোপসহ সারা বিশ্বই এ ঘটনায় চিন্তিত, সবার ফোকাসও এখন এই ইস্যুর প্রতি। এটি যে শুধু বাংলাদেশের সমস্যা তাই নয়, সারা বিশ্বের সামনেই এটি এখন বিরাট চ্যালেঞ্জ—উল্লেখ করেন তিনি।

বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে আধুনিকতা বনাম মধ্যযুগপন্থিদের চলমান এই লড়াইয়ের ফলাফলের ওপরই নির্ভর করছে একটি সভ্য ও মডার্ন বিশ্বের ভবিষ্যৎ—এমন মন্তব্যও করেন প্রভাবশালী এই ব্রিটিশ রাজনীতিক।

দুই সেশনে বিভক্ত এই কনফারেন্স উদ্বোধন করেন ইউরোপিয়ান-বাংলাদেশ ফোরামের সভাপতি আনসার আহমেদ উল্লাহ। মূল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মেঘনা গুহঠাকুরতা। আরও বক্তব্য রাখেন কুইলিয়াম ফাউন্ডেশনের ইসলামিক স্টাডিজ প্রধান ইমাম ড. ওসামা হাসান, অ্যাঞ্জলিয়া রাসকিন ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক মার্টিন ব্রাইট, প্রফেসর তাজিন মুর্শিদ, ইকোনমিস্ট ড. উইলিয়াম ভেন ডার গিস্ট ও দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের ইনভেস্টিগেটিং এডিটর টেড জুরি।

কনফারেন্সের দ্বিতীয় সেশনে বক্তব্য রাখেন ইসলামিক প্রসপেকটিভের পক্ষে মাওলানা ফিরোজ আলম ও মুসলিম স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন, নেদারল্যান্ডসের পক্ষে ইলিয়াস শার্লি। ইলিয়াস শার্লি ইউরোপিয়ান আইসিস ফরেন ফাইটার বিষয়ে রাখেন তার বক্তব্য।

সর্বশেষ খবর