বুধবার, ১৫ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

সাধারণ মানুষই বড় বন্ধু : রাষ্ট্রপতি

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অনেক চড়াই-উতরাই দেখেছি। অনেক মানুষের সঙ্গে মিশেছি। আমার মনে হয়েছে সাধারণ মানুষই আমার সবচেয়ে বড় বন্ধু। তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।’

তিনি গতকাল বিকালে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলায় রোটারি ডিগ্রি কলেজের রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন।

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘আমার রাজনৈতিক জীবনে কখনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দিইনি। নীতির প্রশ্নে আপস করিনি। সব সময় নিজের এলাকার লোকজনের কথা ভেবেছি। তাদের জন্য কাজ করার চেষ্টা করেছি। আপনাদের সঙ্গে মিলেমিশে বাকি জীবন পার করে দিতে চাই। দেখতে চাই একটি সুখী-সমৃদ্ধিশালী সোনার বাংলাদেশ।’ এ সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন ছিল বঙ্গবন্ধুর।’ তিনি বলেন, ‘আমি মূলত একজন রাজনীতিবিদ।’

 রাজনীতি করার কারণে কিশোরগঞ্জের সব উপজেলায় ঘুরেছি, সবার সহযোগিতা নিয়ে জনগণের কল্যাণে কাজ করার অনুপ্রেরণা পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় ১৯৭০-এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আমি সর্বকনিষ্ঠ এমএনএ নির্বাচিত হয়েছিলাম। ’৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি, যা আমার জীবনে এক দুর্লভ সুযোগ। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রায় প্রতিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি এবং সবার সমর্থন ও ভালোবাসা নিয়ে আমি বার বার নির্বাচিত হয়েছি।’ এজন্য তিনি সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘আপনারা আমাকে দুই হাত ভরে দিয়েছেন, বিনিময়ে আমি তেমন কিছুই দিতে পারিনি। এ কষ্ট আমাকে সব সময় পীড়া দেয়।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন বিশ্বব্যাপী রোল মডেল। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে, উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন গণতন্ত্রের বিকাশ ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। পরমতসহিষ্ণুতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে গণতন্ত্র বিকশিত হয়। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতাদর্শের পার্থক্য থাকাই স্বাভাবিক। আমাদের দায়িত্ব হবে গণতান্ত্রিক রীতিনীতির চর্চার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা আরও বেগবান ও অর্থবহ করা। দেশ ও জাতির বৃহত্তর কল্যাণে আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করে যেতে হবে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছে। প্রবৃদ্ধি, উন্নয়ন ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা এখন আর কল্পনা নয়, বাস্তবতা। বৈশ্বিক নানা অভিঘাত মোকাবিলা করে বাংলাদেশ বিগত বছরগুলোয় ৬ শতাংশের ওপরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অব্যাহত রেখেছে। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, কমেছে দারিদ্র্যের হার। মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে কর্মসংস্থান, মজুরি, খাদ্যশস্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। সঞ্চয় ও বিনিয়োগ, আমদানি-রপ্তানিসহ অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। বৈদেশিক রিজার্ভের পরিমাণ বাড়ছে। পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ প্রকল্প আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন হচ্ছে। এটা কম কথা নয়।’

কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আফজাল হোসেন এমপি, অ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিন এমপি, অধ্যক্ষ মুজতবা আরিফ খান প্রমুখ।

রাষ্ট্রপতি পরে অষ্টগ্রাম উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সুধীসমাবেশেও বক্তব্য দেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর