মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
আলোচনা সভায় বক্তারা

মোশতাকের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন মনসুর আলী

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনাদর্শ বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুসরণযোগ্য। তিনি ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশ্বস্ত সহচর। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর খুনি মোশতাক তাকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু মনসুর আলী সেই প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন।’ গতকাল রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর ১০৩তম জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভায় জাতীয় নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। শহীদ এম মনসুর আলী স্মৃতি সংসদ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। শহীদ এম মনসুর আলীর সন্তান মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, মোজাফফর হোসেন পল্টু, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া প্রমুখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, স্বাধীনতার পর খাদ্যের অভাবে কেউ মারা না যাওয়ার কৃতিত্বের দাবিদার এম মনসুর আলী। কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করায় এটা সম্ভব হয়েছিল।

আমির হোসেন আমু বলেন, বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত আস্থাভাজন ছিলেন জাতীয় চার নেতা। বঙ্গবন্ধু যখনই কোনো আস্থার জায়গা খুঁজতেন, তখনই তাদের ওপর নির্ভর করতেন। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জাতীয় চার নেতার মধ্যে একমাত্র এম মনসুর আলীকেই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন খুনি মোশতাক। কিন্তু মনসুর আলী সেই প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন এবং মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেন।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘ছাত্রজীবন থেকে আমি মনসুর আলীসহ জাতীয় চার নেতাকে নিবিড়ভাবে দেখেছি। তাদের রাজনৈতিক শিক্ষায় সমৃদ্ধ হয়েছি। জাতীয় চার নেতা জীবন দিয়েছেন, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বেইমানি করেননি।’ তিনি বলেন, ‘পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট যেদিন জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়, আমরা সেদিন নিঃস্ব হয়ে গিয়েছি। যার নেতৃত্বে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি, যার জন্ম না হলে এ দেশ স্বাধীন হতো না, তাকে বাংলার মাটিতে এভাবে জীবন দিতে হবে, এটা আমরা কখনোই ভাবিনি।’

শহীদ এম মনসুর আলীর সন্তান মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডের পর আমার বাবা মনসুর আলীকে খোন্দকার মোশতাক প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ঘৃণাভরে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এম মনসুর আলী বলেছিলেন, ‘‘আমি প্রধানমন্ত্রী হতে চাই না। জীবন দেব, তবু তোমার মতো বেইমানের সঙ্গে হাত মেলাব না।’’ আমি গর্ববোধ করি এই জন্য যে, আমি খুনি মোশতাকের মতো বেইমানের সন্তান নই।’

সর্বশেষ খবর