বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
৪ হাজার কোটি টাকার ১৫ দরপ্রস্তাব অনুমোদন

আরও ৯ লাখ টন চাল কেনার সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে ১৫ প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নে সরকারের ব্যয় হবে ৪ হাজার কোটি টাকা। গতকাল অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল বারিক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান।

অর্থমন্ত্রী বলেন, গতকাল সভায় অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য দুটি এবং ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য ১৬টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। সরকারি ক্রয় কমিটির ১৬ প্রস্তাবের মধ্যে ১৫টি অনুমোদন করা হয়েছে। এর মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ৮, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ২, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ২, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ১, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ১, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ১ এবং সেতু বিভাগের ১টি ছিল। এতে মোট ব্যয় হবে ৪ হাজার ৪৬ কোটি ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৯২৫ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় হবে ১ হাজার ৪৩ কোটি ১ লাখ ৪০ হাজার ৬০৯ এবং দেশীয় ব্যাংক ও এডিবির ঋণ ৩ হাজার ৩ কোটি ১৫ লাখ ৭৬ হাজার ৩১৬ টাকা।

আরও লাখ টন চাল কিনবে সরকার : বাজার স্থিতিশীল রাখতে আরও ৯ লাখ টন চাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অতিরিক্ত সচিব জানান, ৪ লাখ টন চাল কেনা হবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির মাধ্যমে। বাকি ৫ লাখ টন উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে। দ্রুততম সময়ে চাল আনার জন্য দরপত্রের সময়সীমা ৪২ দিনের পরিবর্তে ১৫ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। খরার কারণে এবার আমনের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন বাস্তবতায় চালের যাতে কোনো ঘাটতি সৃষ্টি না হয়, সেজন্য আগেভাগেই বড় ধরনের ক্রয় পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এর আগে ভারত ও মিয়ানমার থেকে সাড়ে ৩ লাখ টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার, যার অনুমোদন এরই মধ্যে ক্রয় কমিটি দিয়েছে। এ ছাড়া রাশিয়া থেকে ৫ লাখ টন গম আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অন্যদিকে কানাডা ও মরক্কো থেকে ৯০ হাজার টন এমওপি ও ডিএপি সার কিনবে সরকার। সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ৯০ হাজার টন সার কিনতে ৬৮৩ কোটি ১৩ লাখ ৩৮ হাজার টাকা ব্যয় হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল বারিক বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বিএডিসি কর্তৃক কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশন থেকে তৃতীয় লটে ৫০ হাজার টন মিউরেট-অব-পটাশ (এমওপি) সার ৩৮৬ কোটি ১৯ লাখ ৭৬ লাখ ৫৫০ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, অন্য এক প্রস্তাবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বিএডিসি কর্তৃক মরক্কোর ওসিপি এসএ থেকে অষ্টম লটে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার ২৯৬ কোটি ৯৩ লাখ ৬২ হাজার টাকায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

টিসিবির জন্য ১৫ হাজার টন মসুর ডাল কিনবে সরকার : ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য ১৫ হাজার টন মসুর ডাল কেনা হবে। এ লক্ষ্যে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় মসুর ডাল কেনার প্রস্তাবটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১৬৫ কোটি টাকা। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে স্থানীয় সরবরাহকারীদের থেকে এ পণ্য কিনবে সরকার। সরকার স্থানীয় একাধিক কোম্পানির কাছ থেকে ১১০ টাকা কেজিতে ১৫ হাজার টন মসুর ডাল কিনবে। এতে মোট খরচ হবে ১৬৫ কোটি টাকা। ঢাকার ব্লু স্কাই এন্টারপ্রাইজের কাছ থেকে প্রতি কেজি ১১০ টাকা হিসেবে ৫ হাজার টন মসুর ডাল ৫৫ কোটি টাকায়, চট্টগ্রামের মাসুদ অ্যান্ড ব্রাদার্স থেকে ৫ হাজার টন মসুর ডাল ৫৫ কোটি টাকায় এবং চট্টগ্রামের রুবি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড থেকে ৫ হাজার টন মসুর ৫৫ কোটি টাকায় কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

টিসিবির জন্য ২ কোটি ২৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কিনবে সরকার। সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ ধরনের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সয়াবিন তেল কিনতে ব্যয় হবে ৪২১ কোটি ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল বারিক জানান, এর বাইরে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে বোতলজাত সয়াবিন কেনা হবে। ১৮২ দশমিক ৯৫ টাকা হিসেবে ৩০ লাখ লিটার সয়াবিন ৫৪ কোটি ৮৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায় কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর