যথাযোগ্য মর্যাদা ও আনন্দমুখর পরিবেশে সিউলস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে দু'টি পর্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২০ উদযাপিত হয়েছে। নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ঘরোয়াভাবে সীমিত পরিসরে দিবসটি উদযাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
তবে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমনের ঝুকিঁ উপেক্ষা করে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি স্বল্প সংখ্যক দক্ষিণ কোরিয়াস্থ প্রবাসী বাংলাদেশি অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করেন। ১৭ মার্চ সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়।
দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে রাষ্ট্রদূত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এরপর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ থেকে পাঠ করার পর দূতাবাসের কর্মকর্তাগণ দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন। দূতাবাসের উদ্যোগে সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতিসংঘের প্রাক্তন মহাসচিব মি. বান কি মুন বাণী প্রদান করেন এবং তা উক্ত অনুষ্ঠানে পাঠ করা হয়।
এরপর বাংলাদেশ দূতাবাস, সিউল ও কোরিয়া পোস্টের যৌথ উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রকাশিত একটি স্মারক ডাকটিকেট উন্মোচন করা হয়।
পরের পর্বটি ছিল বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের গুরত্ব ও তাৎপর্যের উপর উন্মুক্ত আলোচনা। উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। আলোচনা পর্বে দক্ষিণ কোরিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং মুজিববর্ষের প্রাক্কালে মহান এই নেতার জীবন, বর্ণাঢ্য কর্মজীবন ও রাজনৈতিক কর্মকান্ড সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা লাভের জন্য উপস্থিত সকলকে উৎসাহ প্রদান করেন।
এরপর বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের আলোকচিত্র এবং তার জীবন ও কর্মের উপর লিখিত প্রায় শতাধিক বই নিয়ে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
বিকালে দূতাবাস প্রাঙ্গনে দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠান দূতাবাস পরিবারের শিশু-কিশোরগণ কর্তৃক সমবেত কন্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়। অনুষ্ঠান শুরুর পূর্বে দিবস উদযাপনের জন্য দূতাবাসের উদ্যোগে প্রস্তুতকৃত স্মারক ব্যাজ উপস্থিত সকলের মাঝে বিতরণ করা হয়। উপস্থিত শিশু-কিশোররা কবিতা পাঠ, নৃত্য ও সঙ্গীত পরিবেশন করে।
দূতাবাস শিশু কিশোরদের নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃ্তি অংকন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। উক্ত অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিশু-কিশোরদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। এরপর রাষ্ট্রদূত উপস্থিত শিশু-কিশোরদের সাথে নিয়ে কেক কাটেন।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতুবার্ষিকী উদযাপনের ঐতিহাসিক ক্ষণটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য উপস্থিত সকল অতিথির আলোকচিত্র গ্রহণ এবং আগত অতিথিবৃন্দের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবার পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
বিডি-প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ
