না, দৃশ্যের কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। এক সময় মোহামেডান-আবাহনী খেলা মানেই দুপুরের মধ্যে গ্যালারি ভরে যাওয়া। অথচ গত কয়েক বছর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের লড়াইয়ে তেমনভাবে দর্শকের দেখা মিলছে না। গতকালও ছিল একই অবস্থা। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে মোহামেডান-আবাহনী গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি। অথচ এ নিয়ে ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়নি। অনেকে তাই আক্ষেপ করে বলেন, ঘরোয়া ফুটবলে কখনো আর গ্যালারি ভরবে না। আসলে যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে তাতে শঙ্কাটা ভালোভাবে জেগে উঠেছে। যুক্তি দেখিয়ে অনেকে বলেন, ফুটবলের মান আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। না আছে মান না জনপ্রিয়তা। এ জন্য পয়সা খরচ করে দর্শকরা গ্যালারিতে ঢুকতে চান না। না, এ যুক্তি আবার পুরোপুরি মানা যায় না। কেননা ফুটবলে বাংলাদেশের মান কখনো উঁচুতে ছিল না। সাফ গেমসে স্বর্ণ জেতাটা তখনো অনেক বড় কিছু ছিল। আসলে দর্শক টানতে মান বাড়ানো ছাড়াও ব্যাপক প্রচারেও প্রয়োজন রয়েছে।
ফুটবলে ভারতের মান কি খুব উচ্চ পর্যায়ে। বাংলাদেশের সঙ্গে পার্থক্য খুব একটা বেশি নয়। তারাও এখন দর্শক খরায় ভুগছে। এক সময় ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের খেলা হলেও ১ লাখ আসনবিশিষ্ট সল্টলেক স্টেডিয়ামে গ্যালারিতে জায়গা দেওয়া যেত না। এখন সেই দিন নেই। কিন্তু ভারতীয় ফুটবল সংস্থা বসে নেই। মান বাড়ানোর উদ্যোগতো আছেই দর্শকরা যেন গ্যালারিমুখী হন সে জন্য প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে প্রচার চালানো হচ্ছে। ১১ জানুয়ারি আইলিগে ইস্টবেঙ্গেল ও মোহনবাগানের গুরুত্বপূর্ণ লড়াই ছিল। অথচ এক মাস আগে থেকেই টিভি চ্যানেলগুলোতে আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন প্রচার করতে থাকে। শুধু দুই প্রধানের নয়, অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খেলাতেও প্রচার চালানো হচ্ছে। সামনেই আইএফএ শীল্ড কিন্তু এরইমধ্যে প্রচার শুরু হয়েছে আগে থেকেই। দর্শক আসছে না বলে বাফুফের কর্মকর্তারা হতাশায় বসে আছেন। দর্শক টানতে কোনো চেষ্টাই তারা করছেন না। ভারতের উদাহরণ টানলেই ফেডারেশন থেকে বলা হয় তাদের সংস্থার অর্থের অভাব নেই। তাই বিজ্ঞাপন দেওয়া কোনো ব্যাপার নয়। কিন্তু খুব যে বেশি খরচ পড়ে তাও নয়। তাছাড়া বিজ্ঞাপন প্রচার করলেই বাফুফেকে অর্থ দিতে হবে সে ধারণাও ঠিক না। কেননা ফুটবল দেশের জনপ্রিয় খেলা। এ খেলা জাগাতে বাফুফে যদি উদ্যোগ নেয়, তাহলে তথ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে চ্যানেলগুলোর খুব বেশি পয়সা নেওয়ার কথা নয়। এমনকি সরকারি উচ্চ মহলের নির্দেশে বিজ্ঞাপনও ফ্রি প্রচার করা যেত। আসলে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন বিষয়টি নিয়ে কখনো ভাবেনি। গতকাল বিটিভিতে ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে অথচ বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে যদি জানানো যেত তাহলে মাঠে না যাক অনেক ফুটবলপ্রেমী মোহামেডান-আবাহনীর লড়াই টিভিতেই দেখতেন। মানতো বাড়াতেই হবে। কিন্তু এখন যে করুণ পরিণতি তাতে মিডিয়াতে আকর্ষণীয় প্রচার ছাড়া মাঠে দর্শক আসবে বলে মনে হয় না।