পেশাদার ফুটবল লিগে সবচেয়ে সফল দল বলা যায় ঢাকা আবাহনীকেই। প্রথম তিন আসরে টানা চ্যাম্পিয়ন হয়ে লিগে আবাহনী হ্যাটট্রিকের ও কৃতিত্ব পেয়েছে। অবশ্য ফুটবল লিগে হ্যাটট্রিক শিরোপা তাদের নতুন কিছু নয়। ১৯৮৩, ১৯৮৪, ১৯৮৫ সালেও প্রথম বিভাগে হ্যাটট্রিকের কৃতিত্ব পেয়েছিল। ২০১২-১৩ মৌসুমেও আবাহনী পেশাদার লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়। অর্থাৎ তাদের চির প্রতিদ্বন্দ্বী দল ঢাকা মোহামেডান যেখানে পেশাদার লিগে একবারও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। যেখানে আবাহনী কিনা সাত আসরেই চারবার। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ২ ও শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র ১ বার লিগে বিজয়ের হাসি হেসেছে। চলতি মৌসুমে শেখ রাসেল ও শেখ জামাল অঢেল অর্থ খরচ করে শক্তিশালী দল গড়েছে। তাদের মতো তারকা খেলোয়াড় না থাকলেও দল হিসেবে আবাহনীকেও এবার শক্তিশালী বলা যায়। ফুটবলপ্রেমীদের ধারণা শিরোপা লড়াই তিন দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। কিন্তু ফেডারেশন কাপে আবাহনী চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। সেমিফাইনালেও উঠতে পারেনি। লিগেও তারা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
পেশাদার লিগে প্রথম পর্ব শেষ প্রান্তে এসে ঠেকেছে। এরপর শুরু হবে দ্বিতীয়পর্বের লড়াই। কিন্তু আবাহনী এখনই আট ম্যাচে দুই পরাজয় ও দুই ড্র করে মূল্যবান ১০ পয়েন্ট নষ্ট করেছে। ৮ ম্যাচে এখন তাদের সংগ্রহ ১৪ পয়েন্ট। প্রথম পর্বে খেলা বাকি রয়েছে ঢাকা মোহামেডান ও শেখ জামালের সঙ্গে। দুই ম্যাচ জিততে পারলে প্রথমপর্বে সাবেক চ্যাম্পিয়নদের অ্যাকাউন্টে জমা পড়বে ২০ পয়েন্ট। কিন্তু দলের যে পারফরম্যান্স তাতে আবার পয়েন্ট হারানোর আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। লিগ শুরুর আগে কোচ জর্জ কোটান, ম্যানেজার সত্যজিত দাশ রুপু ও অধিনায়ক প্রাণতোষ দৃঢ়ভাবেই বলেছিলেন, লক্ষ্য তাদের একটাই হারানো ট্রফি উদ্ধার করা। কিন্তু মাঠে যে পারফরম্যান্স তাতে শিরোপা নয় আবাহনী তৃতীয় স্থানে থাকতে পারবে কিনা তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। কথা হচ্ছে আবাহনীকে আবাহনী রূপে দেখা যাচ্ছে না কেন? দলের কেন এ পরিণতি। এ ব্যাপারে গতকাল আবাহনীর ম্যানেজার সত্যজিত দাশ রুপুর সঙ্গে আলাপ হয়। তিনি বলেন, ফুটবল গোলের খেলা, আমাদের খেলোয়াড়রা অসংখ্য সুযোগ নষ্ট করছে। তাই পয়েন্টও হারাচ্ছে। তিনি বলেন, আবাহনী যে মাঠে খারাপ খেলছে তাও না। লক্ষ্য করলে দেখবেন জয় নয়, আমরা যে সব ম্যাচে পয়েন্ট নষ্ট করেছি, সেখানেও আমাদের প্রাধান্য ছিল। কিন্তু গোল মিস করছি। তাহলে কি এখানে খেলোয়াড়রা ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন না। রুপু বলেন, সেই বিতর্কে আমি যাব না। তবে যেভাবে সহজ সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট হচ্ছে তাতে আমিও হতবাক। দলে কি খেলোয়াড়দের পেমেন্ট বাকি বা অন্য সমস্যা রয়েছে। প্রশ্নই উঠে না। আমরা ৮০ ভাগ পেমেন্ট করেছি। বাকি যা আছে অল্পদিনের মধ্যে তা পেয়ে যাবে। সুতরাং সমস্যা কেন থাকবে। রুপু বলেন, ১০ পয়েন্ট হারানো মানে এই নয় যে লিগে আমাদের শিরোপা জেতার সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেছে। সামনে প্রতিটি ম্যাচ ভালো খেললেই চ্যাম্পিয়ন হওয়া যাবে। আমি আশাবাদী ছেলেদের পক্ষে তা সম্ভব।