১৯৯৯ বিশ্বকাপ থেকেই ক্রিকেটারদের জার্সি নম্বরের প্রথা চালু হয়। প্রথম দিকে দলের অধিনায়কের জার্সি নম্বর হতো ১ এবং বাকি দলের জার্সি নম্বর ২-১৫ এর মধ্যে। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার তদানীন্তন ক্যাপ্টেন হ্যান্সি ক্রোনিয়ে। তিনি পরতেন ৫ নম্বর জার্সি আর কার্স্টেনের জন্য বরাদ্দ ছিল ১ নম্বরটি জার্সিটি। এরপর সময় যতই গড়িয়েছে ততই এই ‘ব্যতিক্রম’ই স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ভারতীয় ক্রিকেটাররা কে কোন নম্বরের জার্সি পরেন, আর তার পিছনে রহস্যটাই বা কী।
শচীন টেন্ডুলকার: মাস্টার ব্লাস্টার বহু দিন ৯৯ নম্বর জার্সি ব্যবহার করতেন। পরে ১০ নম্বর ব্যবহার করতে শুরু করেন। অনেকের মতে নামের সঙ্গে মিলিয়ে ১০ সংখ্যাটি ব্যবহার করতেন শচীন।
সৌরভ গাঙ্গুলি: বেশ কয়েক বার নিজের জার্সি নম্বর পরিবর্তন করেছেন গাঙ্গুলি। ২০০৩ বিশ্বকাপের আগে নাকি এক জ্যোতিষীর পরামর্শে ৯৯ সংখ্যাটি ব্যবহার করতে শুরু করেন তিনি। এই নম্বরের জার্সিই সবচেয়ে বেশি বার পরতে দেখা গেছে তাকে।
রাহুল দ্রাবিড়: ভারতীয় ক্রিকেটের ‘দ্য ওয়াল’ ব্যবহার করতেন ১৯ নম্বরের জার্সি। কারণ হিসাবে দ্রাবিড় বলেছিলেন, ‘এর চেয়ে ভালভাবে স্ত্রীর জন্মদিন মনে রাখা সম্ভব না।’
বীরেন্দ্র শেবাগ: ক্রিকেট জীবনের প্রথম দিকে ৪৪ নম্বর জার্সি পরলে পরে এক জ্যোতিষীর পরামর্শে ০০ নম্বর পরতে শুরু করেন তিনি।
মহেন্দ্র সিং ধোনি: ক্রিকেটার হওয়ার আগে ধোনি যখন নিয়মিত ফুটবল খেলতেন, তখন তার জার্সি নম্বর ছিল ৭। সেই জার্সি নম্বরই এখনও ব্যবহার করেন ভারতীয় অধিনায়ক। আসলে ৭ জুলাই ধোনির জন্মদিন। তাই এই নম্বরটাকে লাকি বলে মনে করেন তিনি।
বিরাট কোহলি: বিরাটের যখন ১৮ বছর বয়স, তখন তার বাবা মারা যান। সে দিন ছিল ১৮ ডিসেম্বর। সে দিন থেকেই ভারতের টেস্ট অধিনায়কের জার্সি নম্বর ১৮।
যুবরাজ সিং: যুবরাজের ক্ষেত্রে বিষয়টা বেশ অদ্ভুত। ভারতীয় এই বাঁহাতি অলরাউন্ডারের জীবনে ১২ সংখ্যাটি বারবার ফিরে এসেছে। তার জন্মদিন ডিসেম্বরের ১২ তারিখ চণ্ডীগড়ের ১২ নম্বর সেক্টরে। তাই তার জার্সি নম্বরও ১২।
গৌতম গম্ভীর: গত কয়েক বছর জাতীয় দলের বাইরে থাকা ভারতীয় এই বাঁহাতি ওপেনারের জন্ম ১৪ অক্টোবর। তাই তিনি ৫ (১+৪) নম্বরের জার্সি পরেন।
রোহিত শর্মা: তার পছন্দের নম্বর ছিল ৯। কিন্তু ভারতীয় দলে ওই নম্বরের জার্সির একাধিক দাবিদার থাকায়, তিনি ৪৫ নম্বর জার্সি ব্যবহার করেন। এই নম্বরের জার্সি রোহিতকে তার মা বেছে দিয়েছিলেন। এ ক্ষেত্রে ৪+৫=৯ বিষয়টি মাথায় রাখা হয়েছে।
আজিঙ্কা রাহানে: ভারতের এই তরুণ ডানহাতির লাকি নম্বরও ৯। এ ক্ষেত্রেও তিনি ওই নম্বরের জার্সি না পাওয়ায় ২৭ নম্বরের জার্সি পড়েন। এ ক্ষেত্রেও ২+৭=৯ বিষয়টি মাথায় রাখা হয়েছে।
রবীন্দ্র জাদেজা: ভারতের এই বাঁহাতি অলরাউন্ডার কিন্তু নিজের লাকি নম্বরটি পাননি। জাদেজার লাকি নম্বর ১২। কিন্তু এটি আগে থেকেই যুবরাজ ব্যবহার করায় তিনি তার দ্বিতীয় পছন্দ ৮ নম্বরের জার্সি ব্যবহার করেন।
হার্দিক পান্ডে: ভারতের তরুণ এই অলরাউন্ডারের জার্সি নম্বর ২২৮। বরোদার হয়ে অনূর্ধ্ব ১৬-এর একটি ম্যাচে মুম্বাইয়ের বিরুদ্ধে ২২৮ রান করে দলকে জেতান হার্দিক। তার পর থেকে ওই নম্বরের জার্সি ব্যবহার করেন তিনি।
শিখর ধাওয়ান: ভারতীয় ওপেনারের পছন্দ ২৫ নম্বরের জার্সি। কারণ তার মেয়ের জন্মদিন ২৫ তারিখ। ধাওয়ানের পারিবারিক লাকি নম্বরও ২৫।
হরভজন সিং: ভারতের এই তারকা অফ স্পিনারের জন্মদিন ৩ জুলাই। তাই তার জার্সি নম্বরও তিন।
রবিচন্দ্রন অশ্বিন: ছোটবেলা থেকেই অশ্বিনের পছন্দের সংখ্যা ৯। তাই তার জার্সি সংখ্যা ৯৯। এমনকি তার টুইটার হ্যান্ডেলেও ৯৯ সংখ্যাটি আছে।
জাহির খান: ধোনির মতো সাবেক এই ভারতীয় পেসারের লাকি নম্বরও ৭। কিন্তু ওই নম্বরের জার্সি আগে থেকেই অধিনায়কের জিম্মায় থাকায় তাকে ৩৪ (৩+৪) নম্বরেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
বিডি-প্রতিদিন/২৩ জুন, ২০১৬/মাহবুব