চট্টগ্রাম নগরীর চাক্তাই থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার আউটার রিং রোড প্রকল্পে ১২টি স্লুইস গেট নির্মাণ হচ্ছে। এরই মধ্যে ১০টি নির্মাণ করা হয়েছে। গেটগুলো অস্থায়ীভাবে চালু করা হয়। ফলে এবার টানা বর্ষণে চাক্তাই খাতুনগঞ্জ এলাকায় জোয়ারের পানি ঢোকেনি। জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রকল্পটি আশার আলো দেখাচ্ছে। তাছাড়া কর্ণফুলী নদীর তীর হবে একটি বিনোদন স্পট। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ৪৩৬ কোটি টাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
‘কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটির কাজ ইতোমধ্যে ৬৬ শতাংশ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের মাধ্যমে কর্ণফুলী শাহ্ আমানত সেতু (চাক্তাই খালের মুখ) থেকে কালুরঘাট ব্রিজ পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে একটি বাঁধ কাম আউটার রিং রোড নির্মিত হচ্ছে। ৯ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ৭ কি.মি. কাজ শেষ। সড়ক নির্মাণের পাশাপাশি এটি শহররক্ষা বাঁধও। কর্ণফুলী নদীর বিভিন্ন খালের মুখে ইতোমধ্যে ১০টি স্লুইস গেট নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। গেটগুলো এবারের বর্ষা মৌসুমে অস্থায়ীভাবে চালু করায় চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে জলাবদ্ধতার চিরাচরিত দৃশ্য দেখা যায়নি। সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক রাজীব দাশ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে টানা বর্ষণ হলেই চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গুদাম পানিতে তলিয়ে যেত। কিন্তু এবার সে দৃশ্য দেখা যায়নি। কর্ণফুলী নদীর শাখা খালগুলোর মুখে স্লুইস গেট নির্মাণের কারণে এ পরিবর্তন। আশা করি, পুরো প্রকল্প শেষ হলে চাক্তাই থেকে কালুরঘাটের আশপাশের এলাকাগুলোর জলাবদ্ধতার চিত্র বদলে যাবে। একই সঙ্গে প্রকল্পের মাধ্যমে বিস্তৃত এলাকার জীবনমান উন্নয়ন, শহররক্ষা বাঁধ, পর্যটন এবং আবাসনসহ নানা খাতে পরিবর্তন আসবে। আগামী বছর সড়ক দিয়ে যানচলাচল করার পরিকল্পনা আছে।
কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়কটি ২০১৭ সালে একনেকে অনুমোদন পায়। শুরুতে এটির ব্যয় ছিল ২ হাজার ৩১০ কোটি টাকা। গত বছরের ১৬ আগস্ট প্রকল্প সংশোধন করলে ব্যয় বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে ব্যয় হচ্ছে ৪৩৬ কোটি টাকা। সংশোধিত প্রকল্পে নতুন করে যুক্ত করা হয় ৪৮৪ মিটার দৈর্ঘ্যরে সড়ক, বাস-বে, ফুটওভার ব্রিজ, যাত্রী ছাউনি, রাস্তার পাশের স্থায়িত্ব বাড়াতে রিভিড পেভমেন্ট নির্মাণ, দুটি সংযোগ সড়ক অন্তর্ভুক্তি, ২৫০ বর্গমিটারের একটি ব্রিজ, রেগুলেটরের সঙ্গে আনুষঙ্গিক কার্যক্রম, বিভিন্ন ড্রেন নির্মাণ, রেগুলেটরের মুখে স্লোপ প্রটেকশনের কাজ, রিটেইনিং ওয়াল, ওয়াকওয়ে নির্মাণ, ১ হাজার ৮৪টি এলইডি সড়ক বাতি। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে শাহ্ আমানত সেতু থেকে কালুরঘাট সেতু পর্যন্ত কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষে মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারবে।