রবিবার, ৭ জুলাই, ২০১৩ ০০:০০ টা

জুয়েল আইচ

জুয়েল আইচ

জাদুকে যিনি বিনোদন থেকে শিল্পের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে পরিচিত ও সম্মানিত করেছেন তিনি জাদুকর জুয়েল আইচ। তিনি কেবল জাদুশিল্পীই নন; একাধারে বংশীবাদক, চিত্রশিল্পী, সমাজসেবী ইত্যাদি নানা পরিচয়ে পরিচিত। এ ছাড়াও তার আরেকটি পরিচয় রয়েছে। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। জুয়েল আইচের জন্ম বরিশালে হলেও ছেলেবেলা কেটেছে পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার সমদেকাঠির গ্রামের বাড়িতে। সেই সুবাদে সমদেকাঠি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার প্রথম আনুষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ সম্পন্ন হয়। পরে পিরোজপুর সরকারি হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং স্থানীয় কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে ঢাকার জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এ ছাড়াও শিক্ষকতার সুবাদে তিনি ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট থেকে বিএড কোর্স সমাপ্ত করেন। খুব ছোটবেলা বাড়িতে বেদেবহর এসেছিল, তাদের কাছেই প্রথম জাদু দেখে ভালো লেগে যায় জুয়েল আইচের। সেই ভালো লাগা ভালোবাসায় পরিণত হয় বানারীপাড়া সার্কাস দলের এক জাদুকরের গলা কাটার জাদু দেখে। আর এই ভালোবাসাটা উন্মাদনায় পরিণত হয় সিরাজগঞ্জের জাদুকর আবদুর রশিদের জাদু দেখে, আর কবি বন্দে আলী মিয়ার রূপকথা পড়ে। একটু একটু করে জাদু শিখতে লাগলেন তখন থেকেই, নানার কাছে। তার বিখ্যাত জাদু কাগজ থেকে ডলার বানানো, চোখ বেঁধে গাড়ি চালানো, কাটা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ জোড়া লাগানো ইত্যাদি। মঞ্চে প্রথম জাদু প্রদর্শন করেন ১৯৭২ সালে। এ ছাড়া মিডিয়ায় প্রথম জাদু প্রদর্শন করেন ১৯৭৯ সালে। প্রথমদিকে এক ধরনের ভালোলাগা থেকেই জাদু ক্ষেত্রে তার বিচরণ শুরু হয়। কিন্তু একটা সময় তিনি বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেন। তার ইচ্ছা ছিল যেভাবেই হোক বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে সম্মানের আসনে বসাতেই হবে। সেই থেকেই জোরেশোরে জাদুর চর্চা শুরু। আমাদের জাদুর হাজার বছরের ঐতিহ্যের ইতিহাস তিনি জানতেন। বাংলাদেশের মাথা উঁচু করার হাতিয়ার হিসেবে তাই নিজের জানা ক্ষেত্রকেই বেছে নেন। এরপরের ইতিহাস কেবল সামনে চলার। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এই গুণী শিল্পী বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক

পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেরা জাতীয় পুরস্কার বেস্ট ম্যাজিশিয়ান অব দ্য ইয়ার। সোসাইটি অব অ্যামেরিকান ম্যাজিশিয়ান ১৯৮১ সালে জুয়েল আইচকে এ পুরস্কারে ভূষিত করে। এ ছাড়া ইংল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ফ্রান্স,

মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ দেশ থেকে পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

 

 

সর্বশেষ খবর