কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্রিক সহিংসতা দেশের অর্থনীতিকে খাদের কিনারে নিয়ে গেছে। আশার কথা- দেশব্যাপী সহিংসতায় দেরিতে শিপমেন্ট করার কারণে পোশাক খাতের কোনো অর্ডার বাতিল করবে না বলে জানিয়েছেন বিদেশি পোশাক ক্রেতাদের প্রতিনিধিরা। তারা বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের সময়মতো পোশাক পাঠানো নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা চালু রাখার ওপরও জোর দিয়েছেন বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোর প্রতিনিধিরা। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি বিজিএমইএর সঙ্গে বায়ার্স ফোরামের বৈঠকে মিলেছে এমন সুখবর। রাজধানীর উত্তরায় বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিজিএমইএর সভাপতি বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে পোশাকের অর্ডার বাতিল করা হবে না এমন নিশ্চয়তা পেয়েছেন তারা। বায়ার্স ফোরামের কাছে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। ছাত্র আন্দোলনে পোশাক কারখানাসহ দেশের সরকারি এবং বেসরকারি অফিস, বন্দর ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল কয়েক দিন ধরে। সেই বিবেচনায় ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো পণ্যে মূল্যছাড় এবং এয়ার শিপমেন্ট না চাওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খুচরা পোশাক বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সমঝোতা দেশের জন্য একটি সুখবর। বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ সরাসরি কর্মরত। এ শিল্পের ওপর নির্ভরশীলের সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে পোশাক শিল্প। গত তিন দশকে দেশ দুর্ভিক্ষ ও মঙ্গা নামের মিনি দুর্ভিক্ষ এড়াতে পেরেছে অনেকাংশে পোশাক শিল্পের কারণে। পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের সিংহ ভাগ এসেছে দরিদ্র এবং হতদরিদ্র পরিবার থেকে। দুর্ভিক্ষ ও খাদ্যাভাবের বিপদ থেকে নিজেদের পরিবারকে কিছুটা হলেও তারা সুরক্ষা দিতে সক্ষম হচ্ছে। তৈরি পোশাক এখন দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য। বৈদেশিক মুদ্রা আয়েরও প্রধান খাত। যে বিবেচনায় পোশাক শিল্পকে যে কোনো রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা থেকে দূরে রাখা সংশ্লিষ্ট সবার কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।