উপকূলীয় অঞ্চল ভোলার চরফ্যাশনে সার্জন পদ্ধতিতে সবজি চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। জৈব সার ব্যবহার করে ১২ মাস নিরাপদ বিষমুক্ত সবজি আবাদ করে বেশি লাভ হওয়ায় কৃষক এ পদ্ধতিতে জমি চাষ করে কম খরচে বেশি লাভবান হচ্ছেন। চরফ্যাশন উপজেলার হালিমাবাদ এলাকার কৃষক আক্তার মহাজন জানান, নিরাপদ ও বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করতে কৃষি অফিসের পরামর্শে কয়েক বছর আগে রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে জৈব ও কেঁচো সার দিয়ে ৪ শতাংশ জমিতে সার্জন পদ্ধতিতে চাষাবাদ শুরু করেন। বর্তমানে পরিধি বৃদ্ধি করে ৪ একর জমিতে সার্জন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছেন। তিনি বলেন, প্রথমে জমি থেকে মাটি কেটে উঁচু করে আড়া বাঁধা হয়। আড়ার ফাঁকে নালা তৈরি করা হয়। পরে আড়ার ওপর বিভিন্ন সবজি চাষ করা হয়। আর আড়ার নালাতে তেলাপিয়া, রুই, পাঙাশ, কই, মাগুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করা হয়।
সার্জন পদ্ধতিতে বর্ষা মৌসুমে পানিতে জমির আড়া ডোবে না। বিষমুক্ত হওয়ায় সার্জন পদ্ধতিতে নিচে মাছ ওপরে সবজি চাষ করে বেশ লাভবান হওয়া যায়। এ পদ্ধতিতে প্রায় ১২ মাস হাট-বাজারে বিষমুক্ত সবজি বিক্রি করার পাশাপাশি নিজের পরিবারেও সবজির চাহিদা পূরণ হয়। এ পদ্ধতিতে বিষমুক্ত সবজি জেলার বাইরে বাণিজ্যিকভাবে রপ্তানি করছেন কৃষক আক্তার মহাজন। আছলামপুর এলাকার কৃষক নূরনবী সিকদার বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলে বিভিন্ন সময়ে প্রাকৃতিক ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের সময়ে লবণাক্ত পানিতে ধানের ফলন কম হয়। এজন্য কৃষকরা সার্জন পদ্ধতিতে বিষমুক্ত সবজি আবাদের দিকে ঝুঁকছেন। এলাকার ৪০ জন কৃষকের সমন্বয়ে গঠিত কৃষকদল মিলে ৬০ একর জমিতে সম্মিলিতভাবে সার্জন পদ্ধতিতে সবজি চাষ করেছেন। একরপ্রতি সবজি চাষে খরচ হয় ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা। আর লাভ হয় ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা। মাছ চাষে একরপ্রতি আয় হয় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। জলাশয়ে মাছের জন্য তেমন খাবার দিতে হয় না। সবজি বা ঘাসের পচা অংশ, ছোট পোকামাকড় খেয়ে মাছ বড় হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, এ বছর চরফ্যাশনের ২১ ইউনিয়নে ৮০০ হেক্টর জমিতে সার্জন পদ্ধতিতে সবজি চাষাবাদ করেছে কৃষকরা।
বিডি প্রতিদিন/এমআই