২৪ মে, ২০২০ ০৯:৩৬

রাবিতে ১৩ পিসিআর মেশিন থাকলেও হচ্ছে না ব্যবহার!

রাবি প্রতিনিধি:

রাবিতে ১৩ পিসিআর মেশিন থাকলেও হচ্ছে না ব্যবহার!

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দশটির বেশি উন্নত মানের ল্যাব, পর্যাপ্ত দক্ষতা সম্পন্ন গবেষক, এমনকি দু’টি রিয়েলটাইমসহ ১৩টি পিসিআর মেশিন, প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও দক্ষ লোকবল থাকার পরও করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয়টি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রশাসনের আগ্রহের অভাবেই এখানে পরীক্ষা শুরু করা যাচ্ছে না।

তবে রাজশাহীতে সংক্রমণের হার তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় করোনা শনাক্তকরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতার প্রয়োজন পড়ছে না বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষকরা।

জানা গেছে, ইনস্টিটিউট অব বায়োলোকিজ্যাল সায়েন্স, ফলিত রসায়ন বিভাগে দু’টি আরটি পিসিআর মেশিন রয়েছে। এছাড়া উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ফার্মেসি, প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগেও পিসিআর মেশিন আছে। ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগে একসঙ্গে ৪৮টি এবং ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল সায়েন্স বিভাগের ল্যাবে একসঙ্গে ৯৪টি করোনার নমুনা পরীক্ষার সক্ষমতা রয়েছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এই দু’টি ল্যাবে কেনা আরটিপিসিআর মেশিন বসানো হয়েছে কয়েক বছর আগেই। এগুলো চালুও রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাকাজে।

রাবি প্রশাসনের অনিচ্ছার কারণে এখনও দু’টি ল্যাব চালুর কোনো ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে কোন কোন বিশ্বিবদ্যালয়ে করোনা ল্যাব চালুর সক্ষমতা রয়েছে তা জানতে চিঠি দেওয়া হলেও সেটিও গোপন করে যায় রাবি কর্তৃপক্ষ। ফলে ইউজিসি থেকেও এই দু’টি ল্যাব চালুর ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে সূত্র।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. বিশ্বনাথ শিকদার বলেন, ‘আমার তত্ত্বাবধানে চারটি পিসিআর থাকলেও তা কিউ পিসিআর বা আরটি পিসিআর নয়। আমাদের কাছে থাকা পিসিআর মেশিন দিয়েও করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা সম্ভব। তবে তা থেকে ফলাফল পেতে কিউ পিসিআর বা আরটি পিসিআর মেশিন থেকে তুলনামূলকভাবে বেশি সময় লাগবে। তবে প্রযুক্তি না থাকলেও আমাদের বিভাগে বেশ কয়েকজন আরটি পিসিআর বা কিউ পিসিআর মেশিন পরিচালনায় দক্ষ শিক্ষক রয়েছেন যারা করোনা পরীক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম।’

বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি বিভাগে ৪টি পিসিআর মেশিন থাকলেও সেগুলোও আরটি পিসিআর নয় বলে জানান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. তোফাজ্জল হোসেন। 

তবে করোনা পরীক্ষায় তার বিভাগ সহায়তা করতে প্রস্তুত বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘করোনা পরীক্ষায় বিভাগের স্নাতকোত্তর এবং সাবেক শিক্ষার্থীরা ভূমিকা রাখতে পারবেন। তাছাড়া বিভাগের শিক্ষকরা করোনা পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে প্রস্তুত রয়েছেন।’

ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মাদ তৌফিক আলম করোনা পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন, ‘রাজশাহী মেডিকেল কলেজ এবং মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘রাজশাহীতে তুলনামূলকভাবে করোনা সংক্রমণের হার কম হওয়ায় এখনও আমাদের সহযোগিতার প্রয়োজন পড়ছে না। তাছাড়া করোনা শনাক্তকরণের এ কাজগুলো বায়োসেফটি লেভেল ৩ বা ৪ এ সম্পন্ন করতে হয় যার সাথে জাতীয় নিরাপত্তার বিষয় জড়িত।’ তবে প্রয়োজন পড়লে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত আছেন বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, ক্যাম্পাসে রোগটি টেনে না নিয়ে আসার জন্য হয়তো অনেকে করোনা পরীক্ষায় অংশ নিতে আগ্রহী হচ্ছেন না। তাছাড়া আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবগুলো বায়োসেফটি লেভেল-২ এ কাজ করার উপযোগী। সংক্রামক রোগগুলো নিয়ে কাজ করতে গেলে ল্যাবের সক্ষমতা বায়োসেফটি লেভেল-৩ এ উন্নীত করা প্রয়োজন।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর