২৩ মে, ২০২২ ২০:৩১

বানভাসিদের এবার ঘরে ফেরার যুদ্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

বানভাসিদের এবার ঘরে ফেরার যুদ্ধ

সিলেট থেকে নেমে গেছে বন্যার পানি। আক্রান্ত এলাকার যেসব মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গিয়েছিলেন, তারা শুরু করছেন ফিরতে। কিন্তু ঘরে ফিরতে গিয়ে মারাত্মক দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে তাদেরকে।

বন্যার পানিতে নিমজ্জিত বাসা-বাড়ির ভেতর ময়লা আবর্জনা ও পলি জমেছে। এগুলো পরিচ্ছন্ন করতে গলদঘর্ম হতে হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনদের। ময়লা আবর্জনা পচে বন্যাকবলিত এলাকায় মারাত্মক দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে দুর্গন্ধে এলাকায় থাকা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া সিলেট নগরী ও বিভিন্ন উপজেলায় যেসব কাঁচা ঘরবাড়িতে বন্যার পানি উঠেছিল সেগুলো ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পানি নামায় এবার মেরামতে ব্যস্ত হয়ে ওঠেছেন ঘরের মালিকরা।

সুরমার পানি হ্রাস পেয়ে বিপদৎসীমার নিচে নামায় সিলেট নগরী থেকে নেমে গেছে পানি। বন্যাকবলিত এলাকার মানুষও ফিরতে শুরু করেছেন বাড়িঘরে। কিন্তু বাসায় ফিরে তাদেরকে মুখোমুখি হতে হচ্ছে আরেক দুর্ভোগের। চারদিকে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ। বন্যার পানিতে পচে যাওয়া আবর্জনা থেকে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। পানির তোড়ে বাসায় ঢোকা আবর্জনা পচেও দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এই অবস্থায় বাসার ভেতর থেকে ময়লা আবর্জনা ও জমে থাকা পলি পরিষ্কার করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে। অনেক কলোনির কাঁচা ঘর পানিতে ভেঙে পড়েছে।

সিলেট সদর উপজেলা ও সিটি করপোরেশন এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি-ঘরের তালিকা করার নির্দেশ দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এমপি। বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসনে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

সিলেট নগরীর তালতলার বাসিন্দা জাবেদ আহমদ জানান, বন্যায় তালতলা এলাকায় চার-পাঁচ ফুট পানি ওঠেছিল। বাসার ভেতর পানি ওঠায় উপায়ান্তর না পেয়ে এক আত্মীয়ের বাসায় গিয়ে ওঠেছিলেন। পানি নেমে যাওয়ায় তিনি সোমবার বাসায় ফিরেন। কিন্তু বাসার ভেতর ময়লা আবর্জনা ও পলি জমায় পরিবারের সদস্যদের বাসায় নিয়ে আসতে পারেননি। এছাড়া এলাকায় যেভাবে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে তাতে সেখানে থাকা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কর্মকর্তা হানিফুর রহমান জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সিটি করপোরেশনের ১০নং ওয়ার্ড থেকে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু হবে। যেসব স্থানে ময়লা আবর্জনা জমেছে সেসব স্থান পরিচ্ছন্ন করা হবে। পাশাপাশি ব্লিচিং পাউডার ছিটানো হবে।

এদিকে, সিলেটের বন্যা আক্রান্ত বেশিরভাগ উপজেলা থেকে পানি নেমে গেছে। গোয়াইনঘাটে পানি কমে যাওয়ায় গোয়াইনঘাট-সারি ও গোয়াইনঘাট-সালুটিকর সড়ক দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়েছে। কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর ও সদর উপজেলা থেকে নেমে গেছে। দক্ষিণ সুরমা ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। পানি নেমে যাওয়ায় উপজেলাগুলোর বন্যাকবলিত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত কাঁচাবাড়িগুলো ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বন্যায় অনেক কাঁচা ঘরের বেড়া ভেঙে পড়েছে। বন্যার পানি নামায় বাড়ি ফিরে এখন ঘর মেরামত নিয়ে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হচ্ছে এসব নিম্ন আয়ের মানুষদের। 

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর