চট্টগ্রাম নগরের সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠির স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। এর অংশ হিসাবে চালু করা হয়েছে ‘মেয়র হেলথ কার্ড’ ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা। এ কার্ডের মাধ্যমে পাওয়া যাবে ২৪ ধরনের সেবা। এর মধ্যে থাকবে ১৪ ধরনের স্বাস্থ্যসেবা ও ১০ ধরনের রোগ নির্ণয় সেবা।
বুধবার দুপুরে চসিকের কেবি আবদুস সাত্তার মিলনায়তনে আনুষ্ঠাকিভাবে কার্ড বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। চসিক প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভা সঞ্চালনা করেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আলী।
হেলথ কার্ডের মাধ্যমে দেওয়া সেবার মধ্যে আছে এমবিবিএস ডাক্তার, প্যারামেডিকেল সেবা, গর্ভকালীন সেবা, কম্প্রিহেনসিভ এএনসি, নরমাল ডেলিভারি সেবা, সিজারিয়ান ডেলিভারি (বিশেষ ক্ষেত্রে), প্রসব পরবর্তী সেবা (পিএনসি), নবজাতকের স্বাস্থ্যসেবা, কিশোর ও কিশোরীর স্বাস্থ্যসেবা, এম আর সেবা, এম আর পরবর্তী সেবা, সংক্রামক রোগের সেবা, সাধারণ রোগের সেবা, রেফারেন্স সুবিধা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ।
রোগ নির্ণয় সেবার মধ্যে আছে প্রেগনেন্সি টেস্ট পিটি, সিবিসি/এইচবি, রক্তের গ্রুপ, ইউরিন আর ই, আরবিএস, ভিডিআরএল, হেপাটাইটিস বি, আলট্রাসনোগ্রাম, ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া। এছাড়াও স্বাস্থ্যসেবা কার্ডের সুবিধা ও ব্যবহারে নিয়মাবলী হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা কার্ডটি শুধু কার্ড গ্রহীতা ও তার পরিবারের নির্ধারিত সদস্যদের জন্য প্রযোজ্য। কার্ডের মাধ্যমে একটি পরিবারের সকল সদস্য বিনামূল্যে বছরব্যাপী চিকিৎসা সেবা নিতে পারবে। কোনো সদস্য দুর্ঘটনাজনিত কারণে আহত হলে চসিক পরিচালিত জেনারেল হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং কোন সদস্যের নরমাল ও সিজারিয়ান ডেলিভারির প্রয়োজন হলে মাতৃসদন হাসপাতাল সমূহে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা, নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতালসমূহে বিনামূল্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যাবে। তবে কার্ড হস্তান্তর অযোগ্য এবং কার্ড হারিয়ে বা নষ্ট হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিকেল অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তা নবায়ন করতে হবে।
সিটি মেয়র বলেন, ‘অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা জীবন ধারণের মৌলিক উপকরণ। যা আমাদের সংবিধানে স্বীকৃত। এর মধ্যে শিক্ষা ও চিকিৎসা অন্যতম। চট্টগ্রাম নগরীতে এগুলো বাস্তবায়নে নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে চসিক। তাই নগরীর হত দরিদ্র জনগোষ্ঠির স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে চসিক মেয়র হেলথ কার্ড প্রবর্তন করেছে। এই প্রকল্পের আওতায় নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে ৪১ হাজার সুবিধাবঞ্চিত হতদরিদ্র পরিবার এবং পরিবারে সকল সদস্য সারা বছর বিনামূল্যে করপোরেশনের মাতৃসদন হাসপাতাল, দাতব্য চিকিৎসালয় ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সর্বপ্রকার চিকিৎসা সেবা ভোগ করতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, এ স্বাস্থ্য সেবায় বছরে চসিকের ব্যয় হবে প্রায় ২৬ কোটি টাকা। যার মধ্যে শুধুমাত্র মেডিসিন বাবত ব্যয় হবে ৬ কোটি টাকা। যার মাসিক আয় সর্বসাকুল্যে ৮ হাজার ৫০০ টাকা, তাদেরকেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে হেলথ কার্ড প্রদান করবে চসিক। এই কাজটি ৪১ ওয়ার্ডের সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলররা যাচাইবাছাই তালিকা প্রস্তুত করেছে। এতে কোনো ধরণের পক্ষপাতিত্ব করার সুযোগ নেই। আর কার্ডধারীরা যাতে সঠিকভাবে সেবা পায়, তার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক