চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের পাঁচ মাস পাঁচদিন পর ছেলের লাশ বুঝে পেয়েছেন বাবা। বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত মো. ইয়াছিনের লাশ বুধবার দুপুরে তার বাবা বদিউল আলমকে বুঝিয়ে দেয় ডিপো কর্তৃপক্ষ। ইয়াছিন বিএম কনটেইনার ডিপোর লরিচালক ছিলেন। তার বাড়ি ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের গোসাইপুর গ্রামে। চার বোন ও তিন ভাইয়ের মধ্যে ইয়াছিন ছিলেন তৃতীয়।
জানা যায়, গত ৫ জুন রাতে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনার পর ইয়াছিনের কোনো সন্ধান পাচ্ছিল না পরিবার। ছেলেকে জীবিত বা মৃত পাওয়ার জন্য ঘটনার পরই সীতাকুণ্ড ও চট্টগ্রামে এসেছিলেন ইয়াছিনের বাবা বদিউল আলম। বিভিন্ন হাসপাতালে খুঁজেও তার সন্ধান মিলেনি। তখন ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনাও দিয়ে এসেছিলেন।
বিস্ফোরণের সময় ডিপোতে আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ইয়াছিন অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্য তিনি মুঠোফোনে লাইভ দিয়েছিলেন। সেই লাইভ দেখে তার কাছ থেকে অগ্নিকাণ্ডের খবর জানতে অনেকে ফোন দিয়েছিলেন। তখন ইয়াছিন মুঠোফোনে বলেছিলেন, ‘আগুনের ভয়াবহতা অনেক। আমার জন্য দোয়া করিস।’ এর কিছুক্ষণ পর তার লাইভ বন্ধ হয়ে যায়। মুহূর্তেই মুঠোফোনের পর্দা অন্ধকার হয়ে যায়। এরপর থেকে ইয়াছিনের খোঁজ মেলেনি।
ইয়াছিনের বাবা বদিউল আলম বলেন, প্রায় ১০ বছর আগে বিএম কনটেইনার ডিপোতে গাড়িচালকের সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন ইয়াছিন। দুই বছর আগে পদোন্নতি পেয়ে ডিপোর লরিচালক হন। বিস্ফোরণের সময় ইয়াছিন ডিপোতেই ছিলেন। ঘটনার পর থেকেই তিনি নিখোঁজ। ডিএনএ পরীক্ষায় নমুনা দিয়েছি।
ডিএনএ পরীক্ষায় ইয়াছিনের লাশ শনাক্ত হওয়ার পর গত মঙ্গলবার ডিপো থেকে ফোন করে ছেলের লাশ বুঝে নিতে বলেন। ফোন পেয়ে বুধবার ভোরে স্থানীয় ইউপি সদস্যকে নিয়ে সীতাকুণ্ডে আসেন। দুপুরে ডিপো কর্তৃপক্ষ ছেলের লাশ বুঝিয়ে দেন। এখন অন্তত নিজেদের পারিবারিক কবরস্থানে ছেলের কবর দিতে পারব বলে জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এমআই