মাত্র ২ মিনিটেই চলে গেল দুটি জীবন। কেউ যাচ্ছিলেন বাড়িতে, কেউ যাচ্ছিলেন স্ব স্ব কর্মস্থলে। ঘর থেকে বের হয়ে আবারও সেই পরিবারের কাছে ফেরত আসবেন সেই আশায় ছিলেন হয়তো মরিয়মসহ অপর অজ্ঞাতনামা নারীটির। কিন্তু দুইজনই সেই না ফেরার দেশেই চলে যেতে হলো। এমন কথা বললেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আবুল কালাম আজাদ।
সোমবার সকাল ১১টায় এমন এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে গেলো চট্টগ্রাম নগরীতে। তেলবাহী চলন্ত ওয়াগনের সঙ্গে যাত্রীবাহী একটি বাসের সংঘর্ষে শিশুসহ দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। ষোলশহর রেলওয়ে স্টেশনের রেল ক্রসিংয়ে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন মরিয়ম বিবি (৪১) ও অনুমানিক ৩০ বছরের অজ্ঞাতনামা এক নারী। এই ঘটনায় চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অজ্ঞাতনামা নারীর পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আরো ৫ জন গুরুত্বর আহত চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন জিআরপি থানার ওসি হিমাংশু দাশ। তিনি বলেন, আহতরা হলেন মরিয়মের ১২ বছর বয়সী ছেলে সায়েম, নুরুন্নবী, রত্না বেগম ও তার ছেলে নোমান হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।
পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আবদুল হাই বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এ ঘটনায় বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) ফিরোজ ইফতেখারকে প্রধান করে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এটি ৭ দিনের মধ্যেই তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতেও বলা হয়েছে। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন, বিভাগীয় প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, বিভাগীয় সিগন্যাল ও টেলি কমিউনিকেশন কর্মকর্তা মো. সেলিম ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (লোকো) সাইফুল ইসলাম। তবে এ রেলের কোন দোষী ব্যক্তি থাকলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।
ষোলশহর স্টেশন মাস্টার সাহাবুদ্দিন বলেন, ওয়াগনটি ফার্নেস অয়েল নিয়ে হাটহাজারী বিদ্যুৎ কেন্দ্রে যাচ্ছিল, ষোলশহর রেল ক্রসিং অতিক্রম করার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। বাসটি সিগন্যাল অমান্য করে রেললাইনে উঠে যাওয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, বাসটি নতুন পাড়া থেকে নগরীর টাইগারপাস যাচ্ছিল। ক্রসিংয়ে সিগন্যাল বার ফেলার আগে বাসটি রেল লাইন পার হচ্ছিল। এসময় ষোলশহর এলাকায় ট্রাফিক সিগন্যাল পড়ায় বাসটি এগোতে পারেনি।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৬ মে, ২০১৬/ মাহবুব/ আফরোজ