করোনাভাইরাস মহামারিতে যেসব গৃহস্থালী যন্ত্র বেশি কাজে লাগছে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম ওয়াশিং মেশিন। আধুনিক জীবনকে সহজ ও স্বাচ্ছন্দময় করতে এই গৃহস্থালী পণ্যটির জুড়ি নেই। বর্তমানে ওয়াশিং মেশিন সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে প্রয়োজনীয় পণ্য হয়ে উঠেছে। দামটাও চলে এসেছে সবার হাতের নাগালে।
বাংলাদেশে নিজস্ব কারখানায় বিশ্বমানের পণ্য তৈরি ও সাশ্রয়ী দামে সরবরাহ করায় ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিন। সর্বশেষ চার মাসে (জুন-সেপ্টেম্বর) দেশের বাজারে ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিন বিক্রিতে ৮০ শতাংশেরও বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। একই সময়ে বেড়েছে রফতানিও।
ইতোমধ্যেই নেপাল, ইয়েমেন, পূর্ব তিমুর ইত্যাদি দেশে ওয়াশিং মেশিন রফতানি করেছে ওয়ালটন। খুব শিগগিরই ভারতে রফতানি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশে তৈরি ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিন। সব মিলিয়ে দেশের বাজারে ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিনের হিস্যা যেমন বাড়ছে, তেমনই বাড়ছে রফতানি কার্যক্রম। দেশে ওয়াশিং মেশিনের উৎপাদন, বিপণন, রফতানি এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে কথা হয় ওয়ালটন হোম অ্যাপ্লায়েন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) প্রকৌশলী আল ইমরান-এর সঙ্গে।
প্রশ্ন : করোনাভাইরাস দুর্যোগের কারণে ব্যবসা খাত বেশ কঠিন সময় পার করছে। এ সময়ে ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিনের বিক্রি কেমন গেছে?
করোনাভাইরাস শুধু বাংলাদেশই নয় বরং পুরো বিশ্বের অর্থনীতির ওপর বিরুপ প্রভাব ফেলেছে। ব্যবসা কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়লেও বর্তমানে এ অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে হয়তো আরো সময় লাগবে। করোনার কারণে শুরুর দিকে যে ধাক্কা ছিল, তা আমরা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। গত ৪ মাসে (জুন-সেপ্টেম্বর) ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিনে ৮০ শতাংশেরও বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আমরা আশা করছি এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।
প্রশ্ন : ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিন কারখানা সম্পর্কে বলুন। আয়তন, কর্মী, দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা কত?
গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটনের কারখানা অবস্থিত। পুরো ওয়ালটন কারখানার আয়তন সাড়ে সাতশ একরেরও বেশি। শুধু ওয়াশিং মেশিন তৈরির কারখানাটিরই আয়তন ৭০ হাজার বর্গফুট। এখানে কাজ করছেন কয়েক হাজার কর্মী। বর্তমানে দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার ইউনিট। এর অর্থ বাংলাদেশে বর্তমানে ওয়াশিং মেশিনের যে চাহিদা, তা মেটানোর পরও আমরা বিপুল পরিমাণ পণ্য রফতানি করতে পারবো।
প্রশ্ন : ওয়াশিং মেশিন কেনার সময় কোন বিষয়গুলো গ্রাহকের বিবেচনা করা দরকার?
ব্যবহারকারীর বাজেট এবং ব্যবহারের ধরন ও চাহিদার ওপর নির্ভর করে ওয়াশিং মেশিন কেনা উচিত। প্রথমত, সেমি অটোমেটিক এবং অটোমেটিক টপ ও ফ্রন্ট লোডিং ওয়াশিং মেশিন থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী একটি বেছে নিতে হবে। এছাড়াও ওয়াশিং মেশিন কেনার সময় এর ফিচার, ক্যাপাসিটি, বিক্রয়োত্তর সেবা, বিদ্যুৎ খরচ, ডিটারজেন্ট ও পানি সাশ্রয়ের ক্ষমতা ইত্যাদি দেখে কেনা দরকার।
প্রশ্ন : ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিনের বিশেষ সুবিধা কী? এর ফিচারগুলো সম্পর্কে বলুন।
ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিন সুদৃশ্য। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। এতে অত্যাধুনিক সব ফিচার রয়েছে। নগদ মূল্যের পাশাপাশি রয়েছে ইএমআই (ইকুয়্যাল মান্থলি ইন্সটলমেন্ট) এবং কিস্তি সুবিধায় ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিন কেনার সুযোগ রয়েছে। ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিনে গ্রাহকরা পাচ্ছেন ফ্রি ইন্সটলমেন্ট ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা।
উল্লেখযোগ্য ফিচারগুলোর মধ্যে রয়েছে অক্সি-ফ্রেশ, যা কাপড়কে রাখে দীর্ঘক্ষণ ফ্রেশ। রয়েছে মরিচা ও ব্যাকটেরিয়ারোধী ফিচারসমৃদ্ধ ড্রাম, চাইল্ড লক, ইউজার ফ্রেন্ডলি অটোমেটিক আইএমডি কন্ট্রোল প্যানেল, টাচ কন্ট্রোল প্যানেল, এরর মেসেজ ইন্ডিকেশন ও অ্যালার্ম সিস্টেম, টেম্পারড গ্লাস ডোর, এন্টিব্যাকটেরিয়াল ডোর সিল সমৃদ্ধ সুপার লার্জ দরজা, এলিগ্যান্ট রিংকেল ফ্রি ওয়াশ, অত্যাধুনিক থ্রিডি মোশনসমৃদ্ধ হাই ইফেকটিভ পালসেটর, ইফেকটিভ লিন্ট ফিল্টার, ইকোনমিক্যাল কুইক ওয়াশ, অত্যাধুনিক ফাজি কন্ট্রোল অটোমেটিক ওয়াশ ইত্যাদিসহ অসংখ্য ফিচার।
প্রশ্ন : ওয়ালটনের তৈরি ওয়াশিং মেশিন রফতানি হচ্ছে কি? হলে কোন কোন দেশে রফতানি হচ্ছে?
দেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিন রফতানি হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। বর্তমানে ভারত, নেপাল, ইয়েমেন, পূর্ব-তিমুর ইত্যাদি দেশগুলোতে আমরা ওয়াশিং মেশিন রফতানি করছি। বাংলাদেশে তৈরি উচ্চমানের ওয়াশিং মেশিন বহিঃবির্শ্বের ক্রেতাদের কাছে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে। ফলে রফতানি বাজার বাড়ছে। খুব শিগগিরই ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিন রফতানি তালিকায় আরো দেশ যুক্ত হতে যাচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই