১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১১:২৪

ফতুল্লায় মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে ডাকাতি

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

ফতুল্লায় মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে ডাকাতি

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ধর্মগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিমকে (৭২) শ্বাসরোধে হত্যার পর তার ঘর থেকে ২০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটের অভিযোগ উঠেছে। 

মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১১টা থেকে ২টার মধ্যে ফতুল্লার এনায়েতনগর ইউনিয়নের মাওলা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত মুক্তিযুদ্ধা আব্দুল হালিম মাওলা বাজার এলাকার মৃত মহব্বত আলীর ছেলে। 

বুধবার সকাল সাড়ে ৭টায় পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহরের ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।

নিহতের ছেলে হাফেজ মো. মাসুদ জানান, পরিবারের লোকজন মঙ্গলবার আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে যায়। রাতে তার বাবা নিজ রুমে ও সে তার রুমে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত প্রায় ১১টার সময় তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় হাত পা ও চোখ বেঁধে মারধর করে। তার বাবার রুমে কয়জন ছিল তার জানা নেই। তবে দুর্বৃত্তরা রাত ২টায় যাওয়ার সময় জমি বিক্রির ২০ লাখের বেশি টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। দুবৃর্ত্তরা কিভাবে রুমে প্রবেশ করেছে তা বলতে পারেন না মাসুদ। 

ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার এসআই হুমায়ুন কবির জানান, ময়নাতদন্ত রিপোর্টে জানা যাবে মৃত্যুর কারণ। তবে যে ঘরে ঘটনা ঘটেছে সে ঘরে বাহির থেকে ভিতরে প্রবেশ করার কোন আলামত পাওয়া যায়নি। ঘরটিতে চারটি সিসি টিভি ক্যামেরা রয়েছে। তবে ক্যামেরার মেশিন থেকে হার্ড ডিক্স খুলে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। 

নিহতের ছোট মেয়ে নুরুননেছা জানায়, রাত আড়াইটার দিকে তাদের ভাড়াটিয়ার মেয়ে তাকে ফোন করে জানায় যে তাদের বাসায় ডাকাতি হয়েছে। তার ভাইকে হাত-পা বেঁধে মারধর করে টাকা-স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে। এবং তার বাবা কোন কথা বলছে না। সংবাদ পাওয়ার পরপর সে ধর্মগঞ্জস্থ বাসায় ছুটে আসে। 

তিনি আরও জানান, বাসায় ৩০ হাজার টাকা ছিল। সেই টাকা নিয়ে গেছে। বাড়ির কাজ করার জন্য ব্যাংক থেকে মাস খানেক পূর্বে এই টাকা উত্তোলন করা হয়েছিল বলে তিনি জানান।

পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া মাহিনুর বেগম জানায়, তার স্বামী কাচামাল ব্যবসায়ী। প্রতিরাতে দুইটার দিকে সে কাচামাল সংগ্রহে বাসা থেকে বের হয়। রাত দুইটার দিকে তার ঘুম ভাঙলে সে ভাড়িওয়ালার ঘরের দরজায় ঠাস ঠাস শব্দ শুনতে পান এবং গোঙ্গানীর শব্দ শুনতে পেয়ে তার স্বামীকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। তখন সে দরজা খুলে দেখতে পান বাড়িওয়ালার ফ্ল্যাটের প্রধান ফটক খোলা। তিনি ভিতরে প্রবেশ করে দেখেন রুমের ভিতর প্রবেশ করার দুটি দরজা বাইরে থেকে আটকানো। তখন সে বাহিরের সিটকিনি খুলে দেখেন গামছা দিয়ে বাড়িওয়ালার ছেলে হাফেজ মাসুদের হাত-পা বাঁধা এবং অপর একটি কাপড়ের টুকরো দিয়ে মুখ বাঁধাস্থায় ফ্লোরে পড়ে রয়েছে। তখন সে তার হাত-পা ও মুখের বাঁধন খুলে দেন। পাশের রুমে গিয়ে দেখেন বিছানার ওপর পরে রয়েছে মৃতদেহ। 

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ রিজাউল হক বলেন, নিহতের এক ছেলে ও দুই মেয়ে। মেয়েরা স্বামীর বাড়ি থাকেন। ছেলের পরিবারের সাথে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম নিজ বাড়িতে থাকেন। ঘটনার সময় ছেলে ও আব্দুল হালিম ছাড়া কেউ বাড়িতে ছিলেন না। ঘটনাটি রহস্যজনক। গুরুত্ব সহকারে তদন্ত চলছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর