বুধবার, ২৫ মে, ২০২২ ০০:০০ টা
কুমিল্লা সিটি নির্বাচন

ইভিএমে নয়, ভোট দাবি ব্যালটে

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে ইভিএম বাতিল করে ব্যালটে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দীন কায়সার। এ ছাড়া তিনি পুলিশ কর্মকর্তাদের বদলি দাবি করেছেন। এ সময় তিনি আরও পাঁচটি দাবি উত্থাপন করেন। গতকাল ধর্মসাগর পাড়ে তার বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি নেতা এস এ বারী সেলিম, এস এম রহমান, কুমিল্লা আইন কলেজের সাবেক ভিপি মনিরুল ইসলাম বাচ্চু, বিএনপি নেতা আতাউর রহমান ছুটি প্রমুখ।

তিনি বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌর নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ ছিল না।

 দিনের ভোট রাতে, কেন্দ্র দখল ও কেন্দ্র ছিল ভোটার শূন্য। যে কারণে জনগণের মধ্যে এখনো সেই ভয়, আতঙ্ক ও সন্দেহ বিরাজ করছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। কুমিল্লায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েনের মাধ্যমে কিছু মোটরসাইকেল আটক ছাড়া অন্য কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি।

তিনি বলেন, ইভিএমে ভোটের ফলাফল পাল্টিয়ে দেওয়া হবে বলে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের নিয়ে এ ব্যাপারে কোনো আলোচনা ব্রিফিং কিংবা বিস্তারিত কোনো কিছুই তুলে ধরেনি। তাই আমরাও এ বিষয়ে কিছু জানি না। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিল করে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে স্বচ্ছ ব্যালট বক্সে ভোট গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। সিটি করপোরেশন এলাকায় কর্মরত পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার, পরিদর্শক, উপ-পরিদর্শক ও মাঠ প্রশাসনের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নির্বাচনকালীন (প্রতীক বরাদ্দের আগেই) বদলির দাবি জানাচ্ছি।

এ সময় প্রার্থীদের নিজ নিজ অবস্থানে থেকে সিসি ক্যামেরা মনিটরিং করা, নির্বাচনের সময় পর্যন্ত আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়া কোনো নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার না করার নির্দেশনা প্রদান করা, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে নির্বাচন কমিশনের দুই সদস্যের কয়েকটি টিম কুমিল্লায় অবস্থান নিশ্চিত করা ও ম্যাসেঞ্জারসহ অন্যান্য অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কায়সার।

নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মেনেই আপনি নির্বাচনে এসেছেন কিন্তু এখন কেন ব্যালটে চাচ্ছেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইভিএম নিয়ে ভোটারদের মনে শঙ্কা এখনো কাটেনি। আমরা যারা প্রযুক্তি সম্পর্কে জানি, চাইলেই ইভিএমে মনমতো ফলাফল তৈরি করা যায়। তবে যদি প্রত্যক ভোটারের ভোট প্রদানের প্রিন্ট কপি আলাদা ব্যালটে রাখা যায় তবেই ভোটারদের আস্থা ফিরবে। যদি ইভিএম কোনো কারণে হ্যাং করে তাহলে ওই প্রিন্ট কপি গণনা করে ফলাফল নির্ণয় করা যাবে।

এদিকে আপিল শুনানি শেষে আবেদন করা ৯ প্রার্থীর মধ্যে একজন মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীসহ ছয়জনের আপিল মঞ্জুর করা হয়। গতকাল বিষয়টি নিশ্চিত করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদুন্নবী চৌধুরী।

তারা হলেন, ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী কবির আহমেদ, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সৈয়দ রুমন আহমেদ, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ একরাম হোসেন, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী জামাল হোসেন কাজল, মো. প্রন্টু ব্যাপারী এবং ৭ নম্বর সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মো. ফারজানা আক্তার।

এদিকে ২ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী বিল্লাল হোসেন, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. জুয়েল এবং ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের আপিল নামঞ্জুর করা হয়। একজন প্রার্থী আপিল করেননি।

সূত্রমতে, ১৯ মে কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমিতে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে ১০ কাউন্সিলর প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। যার মধ্যে ৯ জন সাধারণ ও একজন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন।

কুসিক নির্বাচনে মেয়র পদে ছয়জন, ২৭টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১২০ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৩৮ জন তাদের মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর