বুধবার, ৭ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

অবসরে গিয়েও গ্র্যাচুইটির টাকা পাচ্ছেন না তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

অবসরে যাওয়ার পরও নিয়মানুযায়ী গ্র্যাচুইটি (আনুতোষিক)-এর টাকা পাচ্ছেন না বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের ৪ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী। তাদের দাবি ২০১৫-১৬ অর্থবছর পর্যন্ত অবসরোত্তর গ্র্যাচুইটির টাকা পরিশোধ করলেও এরপর থেকে লোকসানের দোহাই দিয়ে সংস্থাটি শ্রমিক কর্মচারী-কর্মকর্তাদের প্রাপ্য অর্থ পরিশোধে টালবাহানা করছে। গত কয়েক বছরে সংস্থাটি থেকে অবসর নেওয়া শ্রমিক কর্মচারীর অপরিশোধিত গ্র্যাচুইটির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৩০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন বাংলাদেশে সরকারি মালিকানাধীন একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান যা চিনি উৎপাদন নিযুক্ত। শিল্প মন্ত্রণালয় অধীনস্থ এ সংস্থাটির কার্যক্রম পরিচালনায় রয়েছেন সরকার কর্তৃক নিয়োজিত একজন চেয়ারম্যান ও পাঁচ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ। দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে চলায় প্রতিষ্ঠানটি এখন তহবিল সংকটে পড়েছে। অর্থনৈতিক সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের ২৫ মে পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৭৮ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরে ছিল ৬০৯ কোটি টাকা। করপোরেশনের অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস ইমাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ২০১৫ সাল পর্যন্ত সংস্থাটি অবসরপ্রাপ্তদের গ্র্যাচুইটি পরিশোধ করলেও এরপর থেকে অনিয়মিত হয়ে পড়ে। শিল্পমন্ত্রী, শিল্প সচিব এবং করপোরেশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছি- কোনো সমাধান মেলেনি। গত ৩১ মে শিল্পমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় বলছে, ফান্ড নাই টাকা দেবে কীভাবে। জানা গেছে, স্বায়ত্তশাসিত এই করপোরেশনের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারি কর্মচারীদের মতো পেনশন পান না।

 অবসরে যাওয়ার পর সংস্থাটি থেকে প্রাপ্য এককালীন গ্র্যাচুইটির টাকাই এদের শেষ সম্বল। এখন এই অর্থ না পাওয়ায় দ্রব্যমূল্যেও ঊর্ধ্বগতির বাজারে অনেকে দুঃসহ জীবনযাপন করছেন।

চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের সাবেক কর্মকর্তা (প্রধান, এমআইএস) কৃষিবিদ এ কে এম সামিউল হাসান ভুইয়া বলেন, প্রায় ৪ হাজার শ্রমিক, কর্মচারী গ্র্যাচুইটির পাওনা না পয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। উপায়ন্তর না দেখে তারা এখন আন্দোলনে নেমেছেন। গ্র্যাচুইটি বঞ্চিতরা ৭ জুন চিনি শিল্পভবনসহ চিনি মিলগুলোর গেটে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবেন। আনুতোষিক না দিলে ভবিষ্যতে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি আসতে পারে।

করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. আরিফুর রহমান অপু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা নিজেরাই এখন আর্থিক সংকটে আছি; ফলে প্রতিষ্ঠানের তহবিলে টাকা না থাকায় গ্র্যাচুইটির অর্থ পরিশোধ করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, বর্তমানে সরকারের কাছে ট্রেড গ্যাপ হিসেবে করপোরেশনের ৭ হাজার কোটি টাকার মতো পাওনা আছে। গত মাসে এই অর্থ বরাদ্দ চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এই টাকাটা পেলে গ্র্যাচুইটি পরিশোধ করা সম্ভব হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর