শেরপুরে ভুল চিকিৎসায় এক গৃহবধুর স্তন কর্তনের ঘটনার মামলায় দীর্ঘ সাড়ে ৪ মাস পর সেই সার্জারী বিশেষজ্ঞ ডা. শরীফুল ইসলাম শরীফকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ দুপুরে শহরের নারায়ণপুর এলাকার মুন্নী ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আজ সন্ধ্যার আগে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আ ন ম ইলিয়াস রবিবার জামিন শুনানীর তারিখ ধার্য করে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৬ নভেম্বর শ্রীবরদী শহরের শান ক্লিনিকে চিকিৎসক শরীফুল ইসলাম শরীফকে স্তনের ফোঁড়া দেখাতে যান উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের ভুতনীপাড়া গ্রামের দু’সন্তানের জননী ওই গৃহবধূ। একই উপজেলার চিকিৎসক ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ণ ইউনিটের ডাক্তার শরীফ ওই গৃহবধূর স্তনে টিউমার হয়েছে বলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাকে ময়মনসিংহের সেহরা এলাকার কুন্ডু প্যাথলজিতে পাঠান।
সেখানে পরীক্ষায় ফোঁড়াকে টিউমার চিহ্নিত করে তাতে ক্যান্সার রয়েছে বলে রোগীকে ঢাকায় পাঠানো হয়। চিকিৎসক শরীফ গত ১১ নভেম্বর ওই গৃহবধূকে শাহবাগের মডিউল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে ১৫ নভেম্বর তার বাম স্তন কেটে ফেলেন ঐ ডাক্তার।
পরবর্তীতে বায়োপসি করার জন্য প্রথমে ধানমন্ডির আনোয়ারা মেডিকেল সার্ভিসেস ও পরে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হলে সেখান থেকে জানানো হয়, স্তনে কোনো ক্যান্সার নেই। পরে ওই ঘটনায় ২৯ ডিসেম্বর শেরপুরের সি আর আমলী আদালতে ওই চিকিৎসক ও সেহরা কুন্ড প্যাথলজির ডাক্তার কেকে কুন্ডকে আসামি করে একটি নালিশী মামলা দায়ের হলে গত ৪ জানুয়ারি আদালতের নির্দেশে মামলাটি রেকর্ড হয়।
এরপরও ডা. শরিফুল ইসলাম আদালত থেকে কোন প্রকার জামিন না নিয়েই ঢাকা থেকে শেরপুর এসে নিয়মিত ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখছিলেন। এর প্রতিবাদে মহিলা পরিষদসহ বেশ কিছু সংগঠন মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছিল। আজ পুলিশ অভিযুক্ত ডাক্তার শরীফকে গ্রেফতার করতে পারলেও অপর ডাক্তার কে কে কুন্ডকে পুলিশ গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়।
বিডি প্রতিদিন/ ২০ মে ২০১৬/ হিমেল-১৭