বগুড়ায় ঈদের ছুটি শেষ না হলেও ভোটের মাঠে নেমেছেন প্রার্থীরা। তারা এখন ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে আগামীর উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি তাদের মুখে। সদর উপজেলার উন্নয়ন এগিয়ে নিতে চান প্রার্থীরা। নানাভাবে ভোটারদের পক্ষে নিতে তারা কাজ করছে।
ঈদের ছুটিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন স্থানে ডিজিটাল ব্যানার টানিয়ে, শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রার্থীরা।
আগামী ২৪ জুন বগুড়া সদর আসনের উপ-নির্বাচন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে বিজয়ী বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শপথ না নেওয়ায় তার আসনটি শূন্য হয়। পরে নির্বাচন কমিশন ২৪ জুন তারিখ নির্ধারণ করে তফসীল ঘোষণা করে। উপ-নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীসহ ৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত এসএম টি জামান নিকেতা, বিএনপির গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম ওমর, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনসুর রহমান, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের রফিকুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ কবির আহম্মেদ মিঠু ও মো. মিনহাজ। নির্বাচনে ৭ প্রার্থী থাকলেও আনুষ্ঠানিক প্রচারে প্রধান তিন দলের প্রার্থী। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী কবির আহমেদ মিঠু লিফলেট নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
বিএনপি বর্জন করায় ২০১৪ সালে এ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম ওমর নির্বাচিত হন। পরে তিনি জাতীয় সংসদের হুইপ ও বিরোধি দলীয় চীফ হুইপের দায়িত্ব পালন করেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনিই মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে মির্জা ফখরুলের কাছে পরাজিত হন। ঐ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী না থাকলেও এবারে উপ-নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
এদিকে ঈদের ছুটির রেশ না কাটতেই শুক্রবার থেকেই প্রতীক নিয়ে মাঠে নেমেছে প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগ প্রার্থী টি জামান নিকেতা শুক্রবার দিনব্যাপী নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে গণসংযোগ শেষে সন্ধায় শহরের সাতমাথায় বাংলার মুখের ঈদ আনন্দ উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।
শনিবার বিভিন্ন স্থানে গনসংযোগ, মতবিনিময় শেষে বিকেলে দলীয় কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেন তিনি। পরে মিছিল বের হয় শহরে।
বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক সুলতান মাহমুদ খান রনি জানান, নেতা-কর্মীরা সদর উপজেলা ও শহরের বিভিন্ন স্থানে নৌকার পক্ষে কাজ করছেন। সদর উপজেলাবাসী উন্নয়নের স্বার্থেই এবার নৌকার পক্ষেই রায় দিবে।
বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে সাবেক এমপি হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু শহরের ১২ নং ওয়ার্ডে, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আজগর হেনা ইউনিয়নগুলোতে নির্বাচনী সভা ও গণসংযোগ করছেন। ফাঁপের, নুনগোলা, গোকুল, শাখারিয়াসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ও শহরের বিভিন্ন স্থানে ধানের শীষে ভোট চেয়ে তারা গণসংযোগ করেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আলী আজগর হেনা জানান, বগুড়া বিএনপির ঘাঁটি। সদর আসনে বগুড়াবাসী বিগত সময়ের ন্যায় এবারও বিপুল ভোটে ধানের শীষের প্রার্থীকে বিজয়ী করবে।
সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান এইচএম ইকবাল জানান, বগুড়া সদর আসনে উপ-নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নুরুল ইসলাম ওমর শনিবার বগুড়া শহরের ৬ নং ওয়ার্ডের নাটাইপাড়া, বৌ বাজার, কৈপাড়া সহ বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ ও মতবিনিময় করেন।
এর আগে সকালে শহরের ২০ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে লাঙ্গল মার্কায় ভোট চেয়ে গণসংযোগ করেন তিনি। এসময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য আব্দুস সালাম বাবু, জাপা নেতা সানাউল্লাহ ছানা, আরিফুল ইসলাম শহিদ, সফিকুল ইসলাম সুইট, আলমগীর হোসেন, শরিফুল ইসলাম বাবু, বেলাল হোসেন, সুলতান আহম্মেদ, সাজ্জাদ আলী, চঞ্চল প্রমুখ।
তিন প্রধান দলের প্রার্থীরা মাঠে নামলেও অন্য প্রার্থীদের তেমন চোখে পড়ছে না। স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ কবির আহম্মেদ মিঠু বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের সাথে মতবিনিময় করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় রয়েছেন তবে অন্য প্রার্থীরা মাঠে নেই।
এদিকে নৌকা-লাঙ্গল একসাথে নির্বাচনে থাকায় মহাজোটের তৃনমূলের সমর্থকরা অনেকটা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছে। যে কোনো এক প্রার্থী থাকলে মহাজোটের পক্ষে ভোটের মাঠে সুবিধা হবে বলে অনেকেই অভিমত দিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্র থেকে আগামী ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে কোনো সিদ্বান্ত আসতে পারে বলে জাপার একটি বিশেষ সূত্র জানিয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন