আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তালিকাভূক্ত রোহিঙ্গা শীর্ষ ডাকাত আবদুল হাকিমের আস্তানার সন্ধান খুঁজতে রোহিঙ্গা শিবিরের নিকটবর্তী পাহাড়ে ড্রোন উড়িয়ে অভিযান চালিয়েছে র্যাব। শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টেকনাফের বাহারছড়া টইগ্যা পাহাড়সহ বেশ কয়েকটি দুর্গম গহীণ পাহাড়ে অভিযান চালায় র্যাব-১৫। ডাকাতদের কয়েকটি আস্তানায় অভিযান চালালেও কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। ফলে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘিরে সক্রিয় ডাকাতের সংঘবদ্ধ দল রয়েছে। ডাকাতি ছাড়াও তারা অপহরণ, ধর্ষণ, ছিনতাই, মাদক কারবারে জড়িত। এসব দলের মূলহোতা রোহিঙ্গা ডাকাত আবদুল হাকিম। এ হাকিমসহ তাদের মূল আস্তানা হচ্ছে, ক্যাম্পসংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায়। ড্রোন উড়িয়ে বিভিন্ন পাহাড়ের গহীণ অরণ্যে ডাকাতদের আস্তানার তথ্য সংগ্রহ করেন। পরে পাহাড়ে ডাকাতদের কয়েকটি আস্তানায়ও অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান তারা। তবে ডাকাতদের আস্তানার কিছু নানান তথ্যের সন্ধান পান। তবে তদন্তের স্বার্থে এসব তথ্য এখন বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন অভিযান পরিচালনাকারীর প্রধান র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ।
এই অভিযানে আরও উপস্থিত ছিলেন, র্যাব-১৫ এর উপ-অধিনায়ক মেজর রবিউল হাসান, সিপিএসসি কোম্পানী কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান, সিপিএসসি স্কোয়াড কমান্ডার এডিশনাল এসপি বিমান চন্দ্র কর্মকার, সিপিসি-১ কোম্পানী কমান্ডার লেফটেন্যান্ট মির্জা শাহেদ মাহতাব (এক্স), বিএন, সিপিসি-২ কোম্পানী কমান্ডার এএসপি শাহ আলমসহ অনেকে।
র্যাব সূত্র জানা যায় , রোহিঙ্গা শিবির সংলগ্ন পাহাড়ে ডাকাতদের সক্রিয় সদস্যরা সাধারণ রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের জিম্মি করে প্রায়ই লুটপাট চালায়। এ ছাড়া ডাকাত দলের কোনো কোনো সদস্য আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর পরিচয়ে রোহিঙ্গাদের ঘরে ঢুকে মালপত্র লুট ও অপহরণের অভিযোগ রয়েছে। ক্যাম্পের ভিতরে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও হামলা চালানো হয়। এই প্রথম ড্রোন উড়িয়ে র্যাব-১৫ অধিনায়ক উইং কমান্ডার আজিম আহমেদের নেতৃত্বে র্যাবের টিম বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে ক্যাম্প সংলগ্ন বাহারছড়া টইগ্যা পাহাড়সহ কয়েকটি পাহাড়ে অভিযান চালানো হয়। এসময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে ড্রোনের উড়িয়ে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে ডাকাত দলের। তা নিয়ে কাজ করছে র্যাব।
তাছাড়া সম্প্রতি সময়ে গত ২০ অক্টোবর রাতে টেকনাফ বাহাছড়া শীলখালী মাঠপাড়া এলাকার ‘হেডম্যান’ আবুল কালাম আবুর বসত বাড়ির দরজা ভেঙ্গে স্কুল ছাত্রী লাকি আক্তার (১২) ও তসলিমা আক্তার (১৪) দুই কিশোরী মেয়েকে অপহরণ করে গহীন পাহাড়ে নিয়ে যায়। পরে তিনদিন পর উদ্ধার করা হয়েছিল।
অভিযান শেষে র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ বলেন, ‘এই পাহাড়ি এলাকায় বর্তমানে রোহিঙ্গা হাকিম বাহিনীর অবস্থানের খবর রয়েছে। তারা পাহাড়ি এলাকায় আস্তানায় গড়ে তুলে অপহরণ, খুন ও ধর্ষণের মত অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে। এই হাকিম বাহিনীর গ্রুপকে ধরার জন্য পাহাড়ে প্রাথমিকভাবে আমরা অভিযান পরিচালনা করলাম।
তিনি আরো বলেন, ‘এবার সর্ব প্রথম র্যাব হেড কোয়ার্টার থেকে ড্রোন এনে পাহাড়ি ড্রোনের ওড়িয়ে তাদের আস্তানার খুজার চেষ্টা করা করেছি। কোন সন্ত্রাসী বাহিনীকে ছাড় দেওয়া হবে না উল্লেখ করে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রয়োজনে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় র্যাব হেলিকপ্টারের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করবে।’
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ