বগুড়ার সোনাতলায় খেটে খাওয়া মানুষগুলো দীর্ঘদিন করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন হয়ে ঘরে বসে থাকার পর এবার ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কায় নিজের বসতবাড়ি মেরামত করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এমনকি বাঁশ খুঁটি দিয়ে তাদের বসতবাড়িগুলো পুনঃনির্মাণ করছে।
বগুড়া জেলা সদর থেকে প্রায় ৩১ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে অবস্থিত সোনাতলা উপজেলা। ওই উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে রাক্ষুসী যমুনা ও বাঙালী নদী। ওই দুই নদীর মধ্যে দিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ অতিক্রম করেছে। আর সেই বাঁধে আশ্রয় নিয়ে আছে শত শত পরিবার।
গত বছরের দু’দফা বন্যার ফলে শ্রমজীবী মানুষের বসতবাড়ি নড়বড়ে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তাইতো তারা তাদের বসতবাড়িগুলো করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই ঝড়বৃষ্টির আশংকায় মেরামত করতে এখন ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছে।
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার পাকুল্লা ও মধুপুর ইউনিয়নের ৯টি চর ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলোর সদস্যদের পাকুল্লা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাঁশ কিনতে ভিড় জমাতে দেখা গেছে।
খাবুলিয়া চরের বাসিন্দা শামছুল আলম (৬৫), মহব্বতেরপাড়া চরের এশারত আলী (৫৫), পূর্ব তেকানী চরের তুহিন মিয়া (৩৫), জন্তিয়ারপাড়া চরের বাসিন্দা শাহাদত হোসেন (৪২) জানান, জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাস ঝড়-বৃষ্টির মাস। এই সময় মাঝে মধ্যেই ঝড়-বৃষ্টি সংঘটিত হয়। হাতে কাজ নেই, ঘরে চাল নেই। তারপরও পরিবার পরিজন নিয়ে মাথা গুটিয়ে থাকতে বসতবাড়িগুলো মেরামত করার জন্য টাকা ধার নিয়ে বাঁশ খুঁটি কিনতে এসেছি।
এ বিষয়ে পাকুল্লা ইউপি চেয়ারম্যান জুলফিকার রহমান শান্ত ও তেকানী ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শামছুল হক জানান, তাদের ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি শ্রমজীবী মানুষ রয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে ওই দুটি ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষ ঘরবন্দি হয়ে বাড়িতে অবস্থান করছে। ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কায় তারা ধার দেনা করে ঘরবাড়ি মেরামত করছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শফিকুর আলম জানান, সরকার কর্মহীন মানুষের খাবারের ব্যবস্থা চালু রেখেছে। তাদের বসতবাড়ি মেরামতে এখনও কোন বরাদ্দ আসেনি।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন