কাজী ভুল তথ্য দেওয়ায় এক দম্পতির কাবিননামায় দুই রকম তথ্যের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বরের নিকট কাজী প্রেরিত সত্যায়িত প্রতিলিপিতে দেন মোহর পরিশোধ। অন্যদিকে, কনের প্রতিলিপিতে দেন মোহরের টাকা পরিশোধ লেখেননি রেজিস্ট্রার। কাজীর এমন ভুল সিদ্ধান্তের জেরে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন স্ত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকার ধামরাইয়ে। এ নিয়ে ধামরাই জুড়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
নিকাহ রেজিষ্ট্রার মাওলানা আলিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেছে ভুক্তভোগী স্বামী মিজানুর রহমান। আর স্ত্রীকে তালাক দেয়ায় এ কাবিননামা নিয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী রোজিনা আক্তার দেনমোহর ও যৌতুক আইনে মামলা করেছেন আদালতে। তবে কাবিননামায় সঠিক তথ্য প্রদান না করায় প্রতারণার শিকার হয়েছেন স্বামী-স্ত্রী দুইজনই।
জানা গেছে, মানিকগঞ্জ সদর থানার বিলকেস্টি গ্রামের রোজিনার আক্তারকে ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি বিয়ে করেন ধামরাই উপজেলার সুতিপাড়া ইউনিয়নের বালিথা গ্রামের মিজানুর রহমান। বিবাহ রেজিস্ট্রি করেন ধামরাই পৌরসভার ৫,৬ ও ৭ নং ওয়ার্ডের মুসলিম নিকাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রার (কাজী) মাওলানা আলিম উদ্দিন। গত পাঁচ মাস আগে বিভিন্ন কারনে মিজানুর রহমান তার স্ত্রী রোজিনা আক্তারকে তালাক দেন।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি নিকাহ রেজিষ্ট্রার কাজী আলিম উদ্দিনের কাছ থেকে নিকাহনামার সত্যায়িত প্রতিলিপি উত্তোলন করেন রোজিনা আক্তার। এতে এক লাখ টাকা দেন মোহর পরিশোধ হয়েছে লেখা ছিল না। এরপর রোজিনা বাদি হয়ে মিজানুর রহমানের নামে ১৮ ফেব্রুয়ারি মানিকগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। এছাড়া রোজিনার বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ২০ বছর।
এর আগে, গত ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারিতে মিজানুর রহমান নিকাহনামার সত্যায়িত প্রতিলিপি উত্তোলন করেন মুসলিম নিকাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রার কাজী মাওলানা আলিম উদ্দিনের কাছ থেকে। এতে দেন মোহরের এক লাখ টাকা পুরোটাই পরিশোধ করা হয়েছে মর্মে লেখা আছে এবং রোজিনার আক্তারের বয়স ২২ বছর উল্লেখ করা হয়েছে।
দুইজনের সত্যায়িত প্রতিলিপিতে দেনমোহর ও বয়সের গড়মিল লিখে দেওয়ায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন মিজানুর রহমান ও রোজিনা আক্তার। এ ঘটনায় মিজানুর রহমান আলিম উদ্দিনের নামে গতকাল শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ধামরাই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন।
মিজানুর রহমান অভিযোগ করে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কাজী মাওলানা আলিম উদ্দিন ঘুষের বিনিময়ে দেনমোহরের টাকা পরিশোধ নেই মর্মে কাবিননামার সত্যায়িত প্রতিলিপি দিয়েছেন রোজিনাকে। ফলে রোজিনা মামলা করার সুযোগ পেয়েছে।
এ বিষয়ে কাজী মাওলানা আলিম উদ্দিন ঘুষের বিনিময়ে দুই রকম কাবিননামা সরবরাহের কথা অস্বীকার করে বলেন, আমার ভুল হয়েছে। ঢাকা জেলা রেজিষ্ট্রার সাবেকুন নাহার বলেন, বিষয়টা অনেক বেদনাদায়ক। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ সিফাত