পঞ্চগড়ে সূর্যের দেখা মিলছে না। সারাদিন কুয়াশায় ঢাকা চারপাশ। মেঘলা আকাশ আর হিমেল বাতাশে কনকনে শীত বিরাজ করছে এই জেলায়। বৃহস্পতিবার বিকেলে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে শীতের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দেয়।
আবহাওয়া অফিস বলছে, মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এই জেলার ওপর দিয়ে। উত্তরের হিমেল হাওয়ায় কাহিল হয়ে পড়েছে জনজীবন। কাজ না থাকলে বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। জনজীবন অনেকটা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
সন্ধ্যার পরেই বৃষ্টির মতো শিশির পড়ছে। ঠান্ডার তীব্রতায় কয়েকটি লেপ-কম্বল দিয়ে গা ঢাকা দিতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষ পরছেন দু-তিনটে শীতের কাপড়। স্থবির হয়ে পড়েছে অফিস আদালতের কার্যক্রম। কার্যক্রম শুরু হচ্ছে দুপুর বারোটার পর। হাটে বাজারে ভিড় কমে গেছে।
এদিকে, ঘন কুয়াশায় রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েছে শীতকালীন ফসল। গম, আলু, পিয়াজ, মরিচ, বোরোর বীজতলাসহ অন্যান্য আবাদগুলো ঘন শীতের প্রভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই কৃষকের মাথায় হাত পড়েছে। তারা বলছেন, এবার আশানুরূপ পরিমাণে ফসল উত্তোলন করতে পারবে না। ফলন কম হবে।
সারা দিনের এই ঠান্ডায় কাজে যেতে পারছে না খেটে খাওয়া মানুষ। আয়-রোজগার কমে গেছে তাদের। পরিবার নিয়ে অনেকেই বিপাকে পড়েছেন। বিশেষ করে নদী থেকে পাথর তোলা শ্রমিক, চা শ্রমিক এবং কৃষি শ্রমিকরা সবচেয়ে বেকায়দায় পড়েছেন।
শীতের তীব্রতায় শীত জনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছে প্রতিদিন। অনেক হাসপাতালে জায়গার অভাবে বারান্দা বা মেঝেতে ঠাঁই হচ্ছে এসব রোগীর। এই শীতেও স্কুল যেতে হচ্ছে শিশুদের। জেলায় প্রায় তিন লাখ দরিদ্র শীতার্ত মানুষ বসবাস করছেন। কিন্তু জেলায় এখন পর্যন্ত মাত্র ৩৩ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। সচেতন সমাজ বলছেন এই বরাদ্দ অপ্রতুল।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আরও শীতের কাপড়ের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আজাদ জাহান জানান, এখন পর্যন্ত ৩৩ হাজার ৫৫০টি কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া বেসরকারি উদ্যোগেও অনেক কম্বল দেওয়া হয়েছে। আরও বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই