কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা গ্রামের নাম শালঝোড়। কালজানী ও গদাধর নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চরের মতো এই গ্রামটিতে বসবাসকারী মানুষগুলো রয়েছেন মারাত্মক কষ্টে। তাদের তিন দিকে ভারতীয় সীমানা দ্বারা বেষ্টিত। গ্রাম থেকে বের হলে মাত্র একটি পথ দিয়েই আসা যাওয়া করতে হয়। আর এই পথেই গদাধর নদ।
এলাকাবাসীর মতে, বিগত ২০০০ সালে গদাধর নদের উপর প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)। সেতু নির্মাণের কয়েক বছর পর পরপরের কয়েকটি বন্যায় সেতুটির পশ্চিম পাশের সংযোগ সড়ক ভেঙে বিলীন হয়ে যায়। আর তখন থেকেই এ নদের পাড়ে বসবাসরত মানুষজন সেতু পার হচ্ছেন অনেক কষ্ট করে। ভাঙা সেতুতে জোড়াতালি দিয়ে চলছে সেতু পারাপারের কাজ।
শালঝোড় গ্রামের ময়েজ উদ্দিন (৪০) নামে একজন জানান, এই সেতু পার হয়ে প্রায় ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে কালজানী নদ নৌকা দিয়ে পার হয়ে সেখান থেকে আরও প্রায় ২ কিলোমিটার পর শিলখুড়ি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আসতে হয়। সামান্য কাজের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ পৌঁছাতে এবং বাড়ি ফিরতে পুরোদিন শেষ হয়ে যায়।
বাজারের ব্যবসায়ী এনামুল হক জানান, গদাধর নদের পূর্ব পাড়ে শিলখুড়ি ইউনিয়নের শালঝোড় ওয়ার্ড এবং উত্তর ধলডাঙ্গা ওয়ার্ডের একাংশ অবস্থিত। এখানে লোক সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজারের ওপর। এখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সম্প্রতি নির্মিত হচ্ছে একটি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ক্যাম্প। প্রতিদিন অনেক মানুষ এই সেতুর ওপর দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছে। ভারি কোনো যানবাহন চলতে গেলে নানা রকম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অনেকেই কষ্ট করে ছোট যানবাহনে করে মালামাল পার করেন। বিশেষ করে গ্রামের একমাত্র বাহন শ্যালো মেশিন চালিত ট্রাক্টর কিংবা ডিজেল চালিত ভটভটি দিয়ে কোনো জিনিসপত্র পার করতে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তাই এটি দ্রুত সংস্কার কিংবা নতুন করে ব্রিজ নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।
এ ব্যাপারে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা প্রকৌশলী এন্তাজুর রহমান জানান, নদী ভাঙনের কারণে সেতুটির সংযোগ সড়ক ভেঙে গেছে। স্থানীয়ভাবে বাঁশ দিয়ে সংযোগ সড়ক তৈরি করে চলাচল করা হচ্ছে। তিনি এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন বলে জানান। তবে বরাদ্দ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই