অসময়ে যমুনায় পানিবৃদ্ধিতে বগুড়া সারিয়াকান্দিতে ব্যাপক ফসলহানি হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে বিপাকে কৃষক। উপজেলার ১২২টি চরের নিম্নাঞ্চল এখন পানিতে ডুবে গেছে।
গত কয়েকদিনের পানিবৃদ্ধিতে বগুড়া সারিয়াকান্দির যমুনাচরে নিম্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার বিভিন্ন ধরনের ফসল পানি দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। পানিতে ডুবে কৃষকদের তলিয়ে যাওয়া ফসল তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ।
রবিবার সকালে উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের চরঘাগুয়া এবং বেণিপুর চরের হাজার হাজার কৃষক, কৃষাণি এবং দিনমজুর পানিতে ডুবছে। কেউ পানিতে ড্বু দিয়ে অপরিপক্ক স্থানীয় জাতের কালো এবং সাদা বোরোধান কর্তন করছেন। কেউবা অপরিপক্ক পিঁয়াজ তুলছেন, আবার কেউ অপরিপক্ক বাদাম তুলছেন। এসব অপরিপক্ক ফসল তারা পানি হতে তুলে উঁচু চরে শুকাতে দিচ্ছেন।
চরঘাগুয়া চরের সামচুল শেখের ছেলে কৃষক আব্দুল কুদ্দুস জানান, বেণিপুর চরে তিনি তার ১৫ বিঘা জমিতে পিয়াজের আবাদ করেছিলেন। এতে তার সর্বমোট খরচ হয়েছিল ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। বৃহস্পতিবার সকালে জমিতে এসে দেখেন পানি প্রায় জমির কাছাকাছি চলে এসেছে। এজন্য শুক্রবার তিনি পিয়াজ তোলার জন্য ৪০টি কামলা ঠিক করেন। পরদিন শনিবার জমিতে এসে দেখেন তার প্রায় সব পিয়াজ পানিতে তলে গেছে। কোনমতে ৪০টি কামলা দিয়ে তিনি তার জমির ৩ ভাগের ২ ভাগ পিয়াজ পানি হতে তুলতে পেরেছেন। রবিবারও তিনি ৭টি কামলা নিয়েছেন। তিনি জানান, আমাদের বেণিপুর চরে প্রায় ৪৫ জন কৃষক প্রায় ৫০০ বিঘা জমিতে পিয়াজের আবাদ করছিলেন।
সারিয়াকান্দি কৃষি অফিসের সূত্রমতে, অসময়ে পানিবৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে স্থানীয় জাতের কালো এবং সাদা বোরো ধানের। এ বছর উপজেলায় সর্বমোট ৬৫০ হেক্টর স্থানীয় জাতের কালো এবং সাদা বোরো ধানের আবাদ করা হয়। এর মধ্যে ২৫০ হেক্টর জমির ধান আগেই কর্তন করা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন পানিবৃদ্ধিতে পুরো উপজেলার প্রায় ৭০ হেক্টর কালো এবং সাদা বোরোধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এ বছর উপজেলায় ১৬শ ৬০ হেক্টর জমিতে পিয়াজের আবাদ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কত হেক্টর জমির পিঁয়াজ পানি দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। তবে এর হিসাব চলমান রয়েছে। চিনাবাদামের ক্ষতির হিসাবও চলমান রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ তাসকিয়া জানান, যমুনায় পানি আরও ৩ হতে ৪ দিন বাড়তে পারে। এরপর পানি পুনরায় কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এত সকালেই বন্যা হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল হালিম জানিয়েছেন, যমুনায় অসময়ে পানিবৃদ্ধিতে স্থানীয় জাতের কালো এবং সাদা বোরো ধানের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। কৃষকদের সহায়তা করতে আমাদের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ সবসময় যমুনার চরগুলোতে রয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/এএ