কুড়িগ্রামের ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের জেগে ওঠা চরে আগাম বোরো ধান লাগিয়েছেন চরাঞ্চলের কৃষক। কিন্তু গত এক সপ্তাহের টানা বর্ষণের ফলে নদ-নদীর নিম্নাঞ্চলের আগাম এসব বোরো আবাদ পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা কৃষকদের। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় ও পানি দ্রুত না কমায় কোমর পানিতে নেমে এসব বোরো ধান কেটে নিচ্ছেন কৃষকরা।
তারা পুরো ধান না পেলেও গরুর খাবার হিসেবে বোরো ধান কেটে নিচ্ছেন। এছাড়াও জেলার ৯ উপজেলার নদনদীর চরের ভুট্টা খেত, পাট, পিঁয়াজ ও তরমুজর খেতেরও কিছু কিছু পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এতে কৃষকরা ফসল নষ্টের আশঙ্কা করছেন। রবিবার সরেজমিনে জানা যায়, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তা নদীর চরাঞ্চলের কৃষকরা ক্ষতির আশঙ্কায় পানিতে নেমে বোরো ধান কেটে নিচ্ছেন।
কৃষকরা জানান, আকস্মিকভাবে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বোরো ধান ও অন্যান্য ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এখন ধানতো দুরের কথা ধানের খড়ও পাবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে তাদের। তাই অনেকেই কাঁচা ধান কেটে নিচ্ছেন। অন্যদিকে, পিঁয়াজ, ভুট্টা, পাট ও তরমুজ খেতে পানি ওঠায় কৃষকরা পড়েছেন বিপাকে।
কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, প্রতিবছর কৃষকরা নদ নদীর জেগে ওঠা চরে আগাম বোরো আবাদ করেন। এবছরও চরের এসব জমিতে প্রায় ১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে শুধুমাত্র বোরো আবাদ লাগিয়েছেন। এসব চরে অন্যান্য ফসলের মধ্যে ভুট্টা, পাট, তরমুজ ও পিঁয়াজও চাষ করেছেন কৃষকরা। সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের ধরলা নদীর চরের আরাজী কদমতলা এলাকার কৃষক সাধু মিয়া জানান, আমি এবছর ৪ বিঘা জমিতে আগাম বোরো আবাদ লাগিয়েছি। মোটামুটি ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। আশা করছিলাম ভালো ফলন পাবো। কিন্তু হঠাৎ কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হওয়ায় ডুবে গেছে বোরো খেত। সেগুলো নষ্ট হওয়ার আগে খড় পাওয়ার আশায় কাটছি গরুকে খাওয়াবো।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আব্দুর রশীদ জানান, আমি সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। প্রতিবছরেই জেগে ওঠা চরে কৃষকরা বোরোসহ নানা ফসল আবাদ করে থাকেন। কিন্তু গত কয়েকদিনের অবিরাম বর্ষণে প্রায় ২৭৩ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেলেও আবাদে তেমন কোন প্রভাব পড়বে না।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর