৭ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৭:৩২

আজ চাঁদপুর হানাদার মুক্ত দিবস

চাঁদপুর প্রতিনিধি

আজ চাঁদপুর হানাদার মুক্ত দিবস

ছবি- বাংলাদেশ প্রতিদিন।

৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর মুক্ত দিবস। পাক হানাদার বাহিনীর কবল থেকে ১৯৭১ সালের এদিনে চাঁদপুর জেলা মুক্ত হয়েছিল। এই দিন সকালে চাঁদপুর সদর থানার সামনে বিএলএফ বাহিনীর প্রধান মরহুম রবিউল আউয়াল কিরণ, মমিন খান মাখন, জহিরুল হক পাঠান, হানিফ পাটওয়ারীসহ অনেকেই প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। কিন্তু যুদ্ধে আহত হয়ে হাসপাতালে থাকায় বর্তমান জেলা কমান্ডার এম.এ.ওয়াদুদ উপস্থিত থাকতে পারেননি।

১৯৭১ সালের ৭ এপ্রিল চাঁদপুরে দখলদার বাহিনীর দুইটি বিমান থেকে বোমা নিক্ষেপের মাধ্যমে প্রথম আক্রমণের সূচনা করে। এরপর থেকে হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের দফায় দফায় চলে গুলি বিনিময়। পরে গঠন করা হয় শান্তিবাহিনী। শান্তিবাহিনী ও পাকবাহিনী বিভিন্ন স্থানে চালাতে থাকে বর্বরোচিত অত্যাচার ও হত্যাযজ্ঞ। 

৬ ডিসেম্বর যৌথ বহিনী হাজীগঞ্জ দিয়ে চাঁদপুরে আসতে থাকলে মুক্তিসেনা কর্তৃক হানাদার বাহিনী প্রতিরোধের সম্মুখিন হয়। তখন ভারতের মাউন্টেন ব্রিগেড ও ইস্টার্ন সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধারা যৌথ আক্রমন চালায়। উপায়ন্তর না পেয়ে পাকিস্তানের ৩৯ অস্থায়ী ডিভিশনের কমান্ডিং অফিসার মেজর জেনারেল রহিম খান চাঁদপুর থেকে পালিয়ে যায়।

৩৬ ঘন্টার তীব্র লড়াইয়ের পর ৮ ডিসেম্বর হাজীগঞ্জ শহর এবং বিনা প্রতিরোধে চাঁদপুর শহর মুক্ত হয়। জেলার সকল স্থান থেকে পাক বাহিনী পালিয়ে যায়। রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা অনেকে পালিয়ে যায়, আবার কেউ মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে নিহত হয়। 

মুক্তিযুদ্ধে অগণিত শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে ১৯৮৭ সালে চাঁদপুর শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়কে লেকের পাড়ে নির্মিত হয় স্মৃতিস্তম্ভ ‘অঙ্গীকার’। দেশের প্রথিতযশা ভাস্কর্য শিল্পী আব্দুল্লাহ খালিদ এটি নির্মাণ করেছিলেন। পরে জেলা প্রশাসক কার্যালয় সামনে জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকাসহ স্থাপন করা হয় আরেকটি স্তম্ভ। এছাড়া হাজীগঞ্জ উপজেলার নাসিরকোর্টে নিহত ১১জন শহীদের কবরসহ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মান করা হয়েছে।

২০০৬ সালে চাঁদপুরে প্রথম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কালাম, খালেক, সুশীল ও শংকরের জন্য শহরের ট্রাক রোডে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। ২০১২ সালে শহরের বড় স্টেশন মোলহেডে নির্মিত শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভ ‘রক্তধারা’। যুদ্ধকালীন সময়ে মোলহেডে বহু মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষদের নির্যাতন করে হাত পা বেঁধে মেঘনা নদীতে নিক্ষেপ করে হত্যা করেছে পাক বাহিনী। 

চাঁদপুর হানাদার মুক্তদিবস উপলক্ষে ৮ডিসেম্বর সকাল ১০টায় চাঁদপুর আউটার ষ্টেডিয়াম মাঠে বিভিন্ন কর্মসূচী পালনসহ ৩১তম মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলায় স্মৃতি চারন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সুচনা করা হবে। যদিও  ৫ডিসেম্বর প্রধান অতিথি হিসেবে বিজয় মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন,  বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর