জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। দেড় দশক ভোটবঞ্চনার পর জাতি যখন নির্বাচনের অধীর অপেক্ষায়, প্রচারণার শুরুতেই ঘটল মর্মান্তিক ঘটনা। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোট। এখনো তফসিল ঘোষণা হয়নি। তবে বিএনপি ২৩৭ আসনে মনোনীত প্রার্থী-তালিকা প্রকাশ করায় নির্বাচনি প্রাণচাঞ্চল্য সঞ্চারিত হয়েছে তৃণমূল পর্যন্ত। বুধবার গণসংযোগের সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ। গুলিতে নিহত হয়েছেন তাঁর সঙ্গে থাকা এক ব্যক্তি। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ বলেছে, ভোটপ্রার্থী হামলার মূল লক্ষ্য ছিলেন না। এলোপাতাড়ি গুলিতে তিনি বিদ্ধ হয়েছেন। বিএনপি বলেছে, নিহত ব্যক্তি দলের কেউ নন, আরও অনেকের মতো তিনিও জনসংযোগে অংশ নেন। সন্দেহ নেই যে এটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা; তবে এ থেকে অবশ্যই শিক্ষা নিতে হবে। এটা দেশের সব রাজনৈতিক দল, নির্বাচনের প্রার্থী, আইনশৃৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী- সবার জন্য সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বনের আবশ্যকতা সম্পর্কে কঠোর বার্তা। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বরাবর বলে আসছেন, এবারের নির্বাচন হবে ‘ইতিহাস সেরা’। জনগণও প্রত্যাশা করে- এমন অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক, যা দেশিবিদেশি সব মহলে প্রশংসিত হয়। এবং আগামী দিনে হয় দেশে ‘নির্বাচনের মডেল’। তার জন্য প্রয়োজন গণজাগরণ। সব দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক মনোভাব। প্রয়োজন- সব দলের মধ্যে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক ও সুষ্ঠু রাজনৈতিক সৌজন্যের চর্চা। জুলাই বিপ্লবে হাজারো প্রাণের বিনিময়ে, অসংখ্য মানুষের চরম ত্যাগে অর্জিত নতুন বাংলাদেশে নির্বাচন কেন্দ্র করে আর কোনো রক্তপাত, প্রাণহানি দেখতে চায় না জাতি। এ ব্যাপারে নেতা-কর্মীদের সচেতন ও সতর্ক করা শীর্ষ নেতৃত্বের কর্তব্য। প্রশাসনকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রার্থীদের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচিত তফসিল ঘোষণার আগেই সারা দেশে চিরুনি অভিযান চালিয়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। এ ব্যাপারে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন- সংশ্লিষ্ট সব পক্ষেরই সর্বাত্মক সমর্থন ও সহযোগিতা দেওয়া জরুরি কর্তব্য।