সানি লিওন মানেই বিতর্ক, সানি লিওন মানেই আকর্ষণ। ছিলেন পর্নতারকা, হয়েছেন বলিউড অভিনেত্রী। করছেন সংসার। স্বপ্ন দেখছেন মা হওয়ার। স্বল্পসময়ে হিন্দি সিনেমায় নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন উষ্ণতা ছড়িয়ে। রাখি সাওয়ান্তের মতো শরীরি উত্তাপ ছড়িয়ে পর্দায় জায়গা করে নেওয়া অভিনেত্রীদের রোজগারে ভাগ বসিয়ে বাড়িয়েছেন শত্রুর সংখ্যা। তাকে গালিও যেমন শুনতে হয়, তেমনি গুগলে সানির নামটিই থাকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের অনুসন্ধান তালিকার শীর্ষে। সম্প্রতি ভারতের বাংলা সংবাদমাধ্যম এবেলাকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বহুল আলোচিত-সমালোচিত সানি লিওন। সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো-
• অভিনেতা এবং স্টার— এই দুই অভিধার মধ্যে একটা ভিত্তিগত পার্থক্য রয়েছে, সেটা আপনি কি মনে করেন? আপনি তো স্টার...
সানি: আমি নিজেকে মোটেও ‘স্টার’ হিসেবে দেখি না। আমি কেবলমাত্র একজন অভিনেতা এবং এন্টারটেনার। ‘স্টার’ কাকে বলে...? সলমন খান, আমির খান, এস আর কে... এঁরা স্টার!!
• আপনার কি মনে হয়, হিন্দি ছবিতে আপনার ইমেজ একটা বিশেষ ধাঁচে আটকে থাকছে, একটা বিশেষ ধরনের চরিত্রেই কাস্ট করা হচ্ছে আপনাকে? যদি তা হচ্ছে বলে মনে হয়, ঠিক কী কারণে এমনটা হচ্ছে তা যদি জানান...
সানি: আমি কী বলব এই ব্যাপারে! এটার উত্তর দিতে পারবেন দর্শকরা। যদি দর্শকরা আমাকে একটা বিশেষ চরিত্রে দেখেতে চান, সে ক্ষেত্রে আমার কিছু করার নেই।
• ভারতীয় দর্শকরা আপনাকে কীভাবে দেখছেন বলে আপনার মনে হয়? আপনার আবেগ-অনুভূতির জগৎটাকে কি তাঁরা স্পর্শ করতে পারছেন, আপনার শিল্পীসত্তা আর বিনোদনের মধ্যেকার আদান-প্রদানকে তাঁরা কতটা বুঝতে পারছেন?
সানি: আমার মনে হয়, তাঁরা এটা ছুঁতে পারছেন। তবে, সাধারণভাবে সেলিব্রিটিদের ব্যাপারে চিন্তা করার সময়ে তাঁরা কতটা তাঁদের অনুভবের জগৎটাকে ভাবেন, সেটা বলা দুরূহ...কিন্তু, আমিও রক্তমাংসের মানুষ, আমারও আবেগ আর অনুভূতি রয়েছে...
• সানি লিওনের একটা ব্যস্ত কাজের দিন কেমন? একটু বলুন...
সানি: আমার নিজের কাজের যে জায়গাটা আমার দারুণ পছন্দের, সেটা হল এই কাজের বৈচিত্র্য। এখানে প্রতিটা দিন অন্যটার চাইতে এক্কেবারে আলাদা। প্রতিদিনের ওয়ার্ক-ফ্লো সবসময়েই নতুন। একই সঙ্গে কতগুলো কাজই যে করি! তবে, কাজ ব্যাপারটাকে আমি সবসময়েই এনজয় করি। তবে প্রতিদিন যেটা করেই থাকি, সেটা ঘুম থেকে উঠে স্বামীর সঙ্গে কফি আর ব্রেকফাস্ট আর তার পরে ওয়ার্ক-আউট।
• এই মুহূর্তে আপনি এদেশের অন্যতম প্রধান সেলিব্রিটি। আপনার কি মনে হয় ক্যাটরিনা কাইফ, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, কঙ্গনা রানাউতের মতো অভিনেত্রীদের সঙ্গে আপনি একই পংক্তিতে রয়েছেন, অথবা তাঁদের অতিক্রম করে যাচ্ছেন।
সানি: একেবারেই না। যাঁদের নাম আপনি করলেন, তাঁরা প্রত্যেকেই স্বমহিমায় ভাস্বর। প্রত্যেকেই দুর্দান্ত অভিনেত্রী।
• এ দেশে কাজ করতে গিয়ে আপনি কি আপনার কেরিয়ার বহুমুখী করতে আগ্রহী?
সানি: কাজ করতে আমি ভালবাসি। আর প্রথাগত গতানুগতিক কাজে আমার একাবারেই আগ্রহ নেই। অভিনেতার জীবনের উদ্দেশ্যই হল সবসময়ে বহুমুখীনতার দরজাটাকে খুলে রাখা। নিজেকে ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে উপস্থাপন করতে হলে হাতে একসঙ্গে অনেক রকমের কাজকে রাখা দরকার। সেটা খুবই জরুরি।
• ‘মাস্তিজাদে’ বা অন্যান্য আসন্ন প্রজেক্টগুলির কিছু বিশেষ মুহূর্ত যদি আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেন...
সানি: ‘মাস্তিজাদে’-র শ্যুটিংয়ের প্রতিটা দিনই ছিল আপনার কথামতো ‘বিশেষ’। শ্যুটিং করেছি যাকে বলে চুটিয়ে, তার সঙ্গে চূড়ান্ত আড্ডা সারাদিন। আমার পরের ছবিটার নাম ‘ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড’, তার পরের ছবি ‘বেইমান লাভ’। এখন এগুলোর দিকেই তাকিয়ে...
• আত্মজীবনী লেখার কথা ভেবেছেন কখনও?
সানি: নাঃ। সে সময় বোধহয় এখনও আসেনি (হাসি)।
• ভারতে কাজ করার ব্যাপারে আপনার স্বামী ঠিক কতটা সহযোগিতা করেছেন?
সানি: সানি লিওন বলতে মানুষ আজ যা বোঝেন, তা তাঁর সমর্থন ছাড়া সম্ভবই ছিল না। প্রফেশনাল এবং ব্যাক্তিগত— দুই জগতেই তিনি সব সময়ে আমাকে সাপোর্ট করছেন, করে চলেছেন। তিনিই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। তিনিই একমাত্র ব্যক্তি, যাঁর উপরে আমার সবটুকু আগ্রহ আর আতিশয্য ভর করে রয়েছে। ইউএসএ-তে আমি আর কাউকে চিনতাম না, যিনি আমার জন্য এমন একটা ঝড়ো সফরে সঙ্গ দিতে রাজি হবেন। একদিন দেখলাম যাত্রাটা শুরু হয়ে গেল, তেমন টের পাইনি তখন। তার পরে দেখলাম এই আশ্চর্য জার্নিতে তিনি আমার পাশেই রয়েছেন।
• অভিনয়ে না এলে সানি লিওন কী করতেন?
সানি: ধারণা নেই। (হাসি)... হয়তো কোনও বিজনেস ভেঞ্চার।
• তেমন কোনও অভিনেতা রয়েছেন কি, যাঁর সঙ্গে আপনি কাজ করতে মরিয়া?
সানি: তালিকাটা বলি (রহস্যময় হাসি), আমির খান, সালমান খান আর অবশ্যই শাহরুখ খান।
বিডি-প্রতিদিন/০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/ এস আহমেদ