মডেলিংয়ের মাধ্যমে যাত্রা হলেও 'আশিকি' দিয়ে সিনেমায় পা রাখা। ১৯৯০ সালের ১৭ই আগস্ট মুক্তি পেয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল ছবিটি। সেই বছরের সেরা হিট ছবি। একইসঙ্গে সুপারহিট সংগীত। ছবিটির গানের ক্যাসেট বিক্রি হয়েছিল প্রায় দেড় কোটি যা হিন্দি সিনেমার ইতিহাসে রেকর্ড। শ্রীদেবী, দিব্যা ভারতীর যুগে শ্যামলা মেয়ে অনু আগরওয়াল যেন আগুনের ফুলকি হয়ে হাজির হন। তবে এরপরই নক্ষত্রের পতন। দীর্ঘ ১৫ বছর পর তাকে খুঁজে পাওয়া গেল একটি স্কুলে। বিয়ে করেননি। শিক্ষকতার মাঝে খুঁজে নিয়েছেন বাঁচার উপকরণ।
অনুর শুরুটা হয়েছিল মডেলিং দিয়ে। এরপর সঞ্চালনা। নজরে পড়েন মহেশ ভাটের। কিন্তু সিনেমায় অনাগ্রহ মেয়েটির। ফিরিয়ে দেন মহেশকে। কিন্তু মহেশ ভাটের যে অনুকেই চাই। কারণ, তার চিত্রনাট্য যেন অনুর জন্যই লেখা। নানাভাবে অনুরোধ পাঠান মহেশ। বারবার প্রত্যাখ্যত হন। পরে জানান, অনু না করলে ছবিটি তিনি করবেন না। বিখ্যাত পরিচালক। আর না করতে পারলেন না। নতুন নায়ক রাহুল রায়ের সঙ্গে অভিনয় করলেন ‘আশিকি’তে। এক ছবিতেই খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে যান শ্যামলা মেয়েটি। আশিকির পর আরো ৯টি ছবি করেন অনু। তবে বক্স অফিসে সাফল্য পায়নি একটিও। ১৯৯৯ সালে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন নায়িকা। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে কয়েক মাস লড়াই চলে। ২৯ দিন কোমায় কাটানোর পর স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেন। শরীরের কিছুটা অংশও বিকলাঙ্গ হয়ে যায়। জ্বলে উঠেই দপ করে নিভে যায় তারকাটি। আর কেউ খোঁজ রাখেনি অনু আগরওয়ালকে। ১৫ বছর পর ২০১৫ সালে বিহারের মুঙ্গের জেলায় কোনো একটি স্কুলে এক সাংবাদিকের নজরে পড়েন মধ্যবয়স্ক এক মহিলা। চুলে পাক ধরা। মুখের চামড়া কুচকে গেছে। কিন্তু ওই সাংবাদিকের চোখ আটকে যায় ওই মধ্য বয়স্ক নারীর দিকে। কেন যেন অতি পরিচিত মনে হচ্ছে তাকে। সেই মধ্যবয়স্ক নারী ওই স্কুলের যোগাসন শিক্ষিকা। সংসারধর্ম হয়নি। সাংবাদিকের অনেক দিনের পরিশ্রমের পর জানা যায়, ওই নারী আর কেউ নয়, ‘আশিকি’র অনু আগরওয়াল। সবকিছু ছেড়ে স্কুলে শিক্ষকতার মাঝে খুঁজে নিয়েছেন নিজের মতো করে বাঁচার উপাদান।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ