শিরোনাম
২১ জানুয়ারি, ২০২২ ১৮:২০

‘পুষ্পা’র সাফল্যে আলোচনার তুঙ্গে রক্তচন্দন কাঠ : কেন এত দাম, কি এর গুণ?

অনলাইন ডেস্ক

‘পুষ্পা’র সাফল্যে আলোচনার তুঙ্গে রক্তচন্দন কাঠ : কেন এত দাম, কি এর গুণ?

১৭ই ডিসেম্বর বড়পর্দায় মুক্তি পায় ‘পুষ্পা'। মুক্তির পর থেকে ছবিটি রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছে। বক্স অফিসে চমক দেখিয়েছে এই ছবি। দক্ষিণের স্টাইলিশ আইকন আল্লু অর্জুন কোনো রকম গ্ল্যামার ছাড়াই এই ছবিতে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন। একই সঙ্গে পুষ্পা’র সাফল্যে আলোচনার তুঙ্গে উঠে এসেছে রক্তচন্দন কাঠ। 

আল্লু অর্জুন ও রাশমিকা মান্দানা অভিনীত এই ছবির গল্পই আবর্তিত হয়েছে রক্তচন্দন কাঠ নিয়ে। কেন্দ্রীয় চরিত্র পুষ্পা কীভাবে এই কাঠ পাচার করে নিজের সাম্রাজ্য বিস্তার করেছিলেন ছবির স্টোরি প্লটে সেই দৃশ্যই ফুটিয়ে তুলেছেন নির্মাতা। যা দর্শকদের হৃদয় জয় করেছে। যে রক্তচন্দন পাচার নিয়ে এই ছবির কাহিনি, সেই কাঠের এত চাহিদা কেন? এই কাঠের বিশেষত্বই বা কী?

ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, রক্তচন্দনকে ভারতে ‘লাল সোনা’ বলা হয়। সোনার মতোই মূল্যবান এই গাছ। এই গাছ খুবই বিরল প্রজাতির। ‘পুষ্পা’ ছবিতে যে শেষাচলম জঙ্গলের কথা বলা হয়েছে রক্তচন্দন ওই শেষাচলম পাহাড়ের ঘন জঙ্গলেই পাওয়া যায়। তামিলনাড়ু লাগোয়া অন্ধ্রপ্রদেশের চার জেলা নেল্লোর, কুর্নুল, চিতোর এবং কাডাপ্পা জেলাতে এই গাছ মেলে। পূর্বঘাট পর্বতের আবহাওয়ায় এই গাছ খুব ভাল হয়। এক একটি গাছের উচ্চতা ৮-১২ মিটার।

অন্ধ্রপ্রদেশে দু’ধরনের চন্দনকাঠ পাওয়া যায়। সাদা এবং লাল। সাদা চন্দনে সুন্দর গন্ধ থাকলেও লাল বা রক্ত চন্দনে কোনও গন্ধ নেই। কিন্তু এই কাঠের বিশেষ গুণের জন্যই বিশ্ব জুড়ে বিপুল চাহিদা। আর সেই চাহিদার কারণেই এই কাঠ পাচার হয়। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) ২০১৮-য় এই গাছকে ‘প্রায় বিলুপ্ত’ শ্রেণির তালিকাভুক্ত করেছে। এই কাঠ এত বিপুল পরিমাণে কাটা এবং পাচার হয়েছে যে, আর মাত্র পাঁচ শতাংশ গাছ পড়ে রয়েছে।

আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে এই কাঠের বিপুল ব্যবহার হয়। হজম, ডায়েরিয়া-সহ বেশ কিছু রোগের চিকিৎসায় এই কাঠ কাজে লাগে। রক্ত শুদ্ধিকরণের গুণও রয়েছে এই কাঠের। ওষধি গুণ ছাড়াও মদ তৈরিতে এই কাঠের বিপুল চাহিদা। এ ছাড়া পূজা-অর্চনা ও প্রসাধনী দ্রব্য তৈরিতেও এই কাঠ ব্যবহার করা হয়।

আন্তর্জাতিক বাজারে কেজি প্রতি তিন হাজার টাকা থেকে এই কাঠ বিক্রি শুরু হয়। ভারতে এই গাছ কাটা কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ। তার পরেও পাচার হয়। পাচার রোখার জন্য ‘রেড স্যান্ডলার্স অ্যান্টি-স্মাগলিং টাস্ক ফোর্স’ও গঠন করা হয়েছে। ২০২১ সালে ৫০৮ কোটি রুপির রক্তচন্দন বাজেয়াপ্ত করেছে এই স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। গ্রেফতার হয়েছে ৩৪২ জন পাচারকারী।

চীন, জাপান, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং অস্ট্রেলিয়ায় এই কাঠের বিপুল চাহিদা। তবে সবচেয়ে বেশি চাহিদা চিনে। তাই পাচারও বেশি হয় ওই দেশে। আসবাব, ঘরসজ্জা এবং বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র তৈরিতে এই কাঠের চাহিদা খুব বেশি চীনে। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।

বিডি-প্রতিদিন/শফিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর