বাংলাদেশের নারীরা চলতি মাসেই বাণিজ্যিক জাহাজে নাবিক হিসেবে কাজ শুরু করবেন। বাণিজ্যিক জাহাজে নারী নাবিকের কাজ বাংলাদেশে এই প্রথম।
প্রথম ব্যাচে মোট ১৩ জন নাবিক যোগ দিচ্ছেন বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের বিভিন্ন জাহাজে। গত ডিসেম্বরে তারা বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি থেকে ক্যাডেট হিসেবে তাদের প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন। তারা জাহাজে মেরিন অফিসার হিসেবে যোগ দিচ্ছেন।
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মকসুমুল কাদের বলেন, 'বাণিজ্যিক জাহাজে নারীদের মেরিন অফিসার হিসেবে চাকরি বাংলাদেশে নতুন এক ইতিহাস। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের প্রতিটি জাহাজে দু'জন করে নারী মেরিন অফিসার নিয়োগ দেয়া প্রক্রিয়া শুরু করেছে৷ মেরিন একাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ শেষ করে ১৩ জন নারী মেরিন ক্যাডেট জাহাজে চাকরির জন্য আবেদন করেছেন। তাদের আবেদন বিবেচনা করা হচ্ছে।'
তিনি জানান, 'তাদের নিয়োগ চূড়ান্ত হতে আরো এক বছর লাগবে। এখন তারা ক্যাডেট হিসেবে শিপিং করপোরেশনে যোগ দিয়ে এক বছরের প্রশিক্ষণ নেবেন। তারপর বিভিন্ন জাহাজে তাদের নিয়োগ দেয়া হবে।'
বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির কমান্ড্যান্ট ড. সাজিদ হোসাইন বলেন, 'বিভিন্ন বাধা-বিঘ্ন অতিক্রম করে এ দেশে প্রথমবারের মতো নারী মেরিন অফিসার সমুদ্রগামী জাহাজে যোগ দিতে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন এসব নারী মেরিন অফিসারকে চাকরির সুযোগ করে দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করল।'
জাহাজে নারীদের চাকরির সুযোগ প্রসঙ্গে ভারতের উদাহরণ দিয়ে ড. সাজিদ বলেন, 'এই পেশায় নারীদের উৎসাহিত করতে ভারত নারীদের জন্য প্রশিক্ষণ ফি ৫০ ভাগ কমিয়েছে আর বয়স দুই বছর শিথিল করেছে৷ ফলে ভারতের ক্ষেত্রে নারী ক্যাডেটের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।'
তিনি জানান, 'বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নারী নাবিকরা আগে থেকেই কাজ করছেন৷ এবার বাংলাদেশও সেই তালিকায় স্থান করে নিচ্ছে৷'
জানা গেছে, সমুদ্রগামী জাহাজে নাবিক পদে বিশ্বের প্রথম নারী হিসেবে ১৯৪৫ সালে যোগ দিয়েছিলেন সুইডিশ এক নারী৷ পরবর্তী সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় আড়াই জাহাজে অফিসার পদে যোগ দিলেও এত দিন বাংলাদেশি নারীদের কোনো সুযোগ ছিল না৷