ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেছেন, ‘জাতীয় নির্বাচন কবে হবে, তা বাংলাদেশের জনগণ ও সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারণ হবে। আমরা কারও ওপর কোনো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের জন্য চাপ দেব না।’ গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপনডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ আয়োজিত ‘ডিক্যাব টক’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মাইকেল মিলার বলেন, ‘রাজনৈতিক রূপান্তর বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের দিকে নিয়ে যাবে। আমরা নির্বাচনের তারিখ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে কোনো চাপ দিচ্ছি না। সংস্কারকাজের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে যথেষ্ট সময় দিতে হবে। এজন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কাজ করছে। দেখা যাক, কতটুকু ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে সংস্কারের বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। আমাদের প্রত্যাশা অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কারে একসঙ্গে কাজ করবে।’ ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট গণ অভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের রিপোর্টকে আমরা সমর্থন করি। তাদের রিপোর্ট অত্যন্ত পরিষ্কার। বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে যারা অপরাধ করেছে, এখন তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। এখানে দায়বদ্ধতা থাকতে হবে। এ প্রক্রিয়া যেন অত্যন্ত স্বচ্ছ হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কীভাবে কাজ করা যায়, তা নিয়ে আমরা কাজ করছি। সামনের নির্বাচন রাজনৈতিক রূপান্তরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হবে। যখন নির্বাচন হবে তখন আমরা এ প্রক্রিয়ায় অংশীদার হতে চাই।’ ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিদল সম্প্রতি ব্রাসেলস সফর করে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে।’
রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়ে মাইকেল মিলার বলেন, ‘রোহিঙ্গারা রাখাইনে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আমরা একটি রাজনৈতিক সমাধান চাই। ইতোমধ্যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে আমরা সেনা কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছি। আমরা ২০১৭ থেকে ৫০ কোটি ইউরোর মতো সহায়তা দিয়েছি। এখন সহায়তার পরিমাণ কমে আসছে। এজন্য আমরা রোহিঙ্গাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল করতে চাইছি।’ মানবিক করিডরের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘উদ্বাস্তুরা যে দেশেই থাকুক না কেন, আমরা তাদের সহায়তা করতে পারলে খুশি হব। যদি সীমান্তের ওপারে থাকে, তবে তাদের সহায়তা করার জন্য আমাদের একটি চ্যানেল লাগবে।’