সম্প্রতি ভারতের ওড়িশার বালাসোরে এক মালগাড়িকে ধাক্কা দেয় যাত্রীবাহী দ্রুতগতির করমণ্ডল এক্সপ্রেস। এতে ২৯১ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয় আট শতাধিক।
এবার পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়ার ওন্দা স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ল দু’টি মালগাড়ি। লুপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়িকে পিছন দিক থেকে এসে সজোরে ধাক্কা মেরেছে অন্য একটি মালগাড়ি। রবিবার ভোরে এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে এই দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ ব্যাখ্যা করলেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) মণীশ কুমার। তিনি জানিয়েছেন, সম্ভবত মালগাড়ির চালক ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তাই সিগন্যাল দেখতে পাননি তিনি।
ওন্দা স্টেশনের লুপ লাইনে বিষ্ণুপুরের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে ছিল একটি মালগাড়ি। বাঁকুড়া থেকে বিষ্ণুপুরের দিকে যাওয়া অন্য একটি মালগাড়ি সেই লাইনে ঢুকে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়িতে ধাক্কা মারে। গতি বেশি থাকায় মালগাড়িটির ইঞ্জিন অপরটির উপরে উঠে পড়ে। দুমড়ে মুচড়ে যায় একাধিক বগি। দুই মালগাড়ির মোট ১৩টি ওয়াগন লাইনচ্যুত হয়েছে এই দুর্ঘটনায়।
এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের ডিআরএম বলেছেন, “চালকের ভুলের কারণেই এই দুর্ঘটনা। মনে হচ্ছে, তার চোখ লেগে এসেছিল। ভোর ৪টার সময় মাঝে মাঝে ঘুম এসে যায়। তাই চালক সিগন্যাল দেখতে পাননি। সিগন্যাল লাল ছিল। পয়েন্ট লুপ লাইনের দিকে সেট করা ছিল। সেখানে অন্য মালগাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। পিছন থেকে সেই মালগাড়িটিতে ধাক্কা মারেন চালক।”
তবে এই ঘটনায় কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন ডিআরএম। দুর্ঘটনায় ছিঁড়ে গেছে ওভারহেড তার। ফলে আদ্রা-খড়্গপুর শাখায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। দ্রুত পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশ্বাস ডিআরএম’র। তিনি জানিয়েছেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই আপ লাইনে ট্রেন চলবে। ডাউন লাইনেও ট্রেন চলাচল ঘণ্টা দু’য়েকের মধ্যে স্বাভাবিক করে ফেলা যাবে।
দুই মালগাড়ির সংঘর্ষের প্রচণ্ড শব্দে রবিবার ভোরবেলা ঘুম ভাঙে স্থানীয়দের। দুর্ঘটনাস্থলে ভিড় জমে যায়। স্থানীয়রাই এগিয়ে এসে চলন্ত মালগাড়ির ভিতরে আটকে পড়া লোকো পাইলটদের উদ্ধার করেন। সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে, ফ্রি প্রেস জার্নাল, দ্য ইকোনমিক টাইমস
বিডি প্রতিদিন/কালাম