দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়া। দেশটির সুমাত্রা দ্বীপের উত্তরদিকে অবস্থিত আচেহ প্রদেশ অতি-রক্ষণশীল হিসেবে পরিচিত, যেখানে ইসলামি শরীয়াহ আইন জারি আছে। এবার ওই প্রদেশে যানবাহনে নারী-পুরুষদের আলাদা বসার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া উন্মুক্ত স্থানগুলোতেও আলাদা লিঙ্গের মানুষদের দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে। প্রদেশটির স্থানীয় সরকার বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সরকারি কর্মচারী এবং সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে। এতে বলা হয়ে, “নারী-পুরুষ যাদের মধ্যে পারিবারিক বা বৈবাহিক কোনও সম্পর্ক নেই তারা পাবলিক প্লেস, নীরব জায়গা এবং যানবাহনে একসঙ্গে হবেন না।”
আচেহ সরকারের মুখপাত্র মুহাম্মদ এমটিএ বলেছেন, ২০৪৫ সালে ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতার ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘যারা জীবনের শুরুতে ইসলামিক ব্যবস্থাকে বিশ্বাসের সঙ্গে মেনে চলে সেই প্রজন্মকে গঠনের উদ্দেশ্যে এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।’
তিনি জানিয়েছেন, ইসলামিক ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে আলোচনার পর ‘প্রতিরক্ষামূলক’ ব্যবস্থা হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এ নির্দেশনা ভঙ্গ করলে কী ধরনের শাস্তির মুখে পড়তে হবে সেটি পরিষ্কার করে বলা হয়নি।
সমালোচনা সত্ত্বেও— আচেহ প্রদেশে জুয়া খেলা, মদ্য পান এবং বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কারণে— শাস্তি হিসেবে প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত করা হয়।
ইন্দোনেশিয়ায় আচেহ প্রদেশে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের শান্ত করতে ২০০১ সালে সেখানে শরীয়াহ আইন প্রচলনের অনুমতি দেওয়া হয়।
এছাড়া বিয়ের আগে কোনো নারী-পুরুষ অস্বাভাবিকরকম কাছাকাছি হলেও আচেহতে শাস্তি দেওয়া হয়।
ইন্দোনেশিয়ার মোট ছয় ধর্মের মানুষ বসবাস করেন। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ইসলাম ধর্ম পালন করেন। তাদের মধ্যে আবার উদারপন্থির সংখ্যা বেশি।
তবে সাবেক স্বৈরশাসক সুহার্তোর পতন হলে ইন্দোনেশিয়ায় রক্ষণশীল ইসলাম জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। স্বৈরশাসক সুহার্তো নব্বইয়ের দশকে দেশটিকে ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদে পরিচালিত করেছিলেন। সূত্র: এএফপি, নিউজ ওয়েভ, দ্য হিন্দু
বিডি প্রতিদিন/কালাম