কবে যেন একটা গান শুনেছিলাম, সে আমার মন কেড়েছে। সেই গানটা আজকাল এভাবে কানে বাজে, সে আমার মই কেড়েছে। কারণ, মানুষ এখন আরেকজনের মন কাড়ার চেয়ে মই কাড়ার কাজে বেশি ব্যস্ত। তবে মই কিন্তু সবসময় কাড়ে না। কাড়ে গাছে তোলার পর। আমার এক ছোটভাই বললো, গাড়ির যাত্রীদের জন্য সিট বেল্টের ব্যবস্থা রাখা হয়। তবে আমি মনে করি, এসব বেল্টে আরও বৈচিত্র্য আনা দরকার। বিশেষ করে ডিজাইন এবং সাইজে। এতে হবে কী, কোনো কোনো বেল্ট গাড়ির বাইরেও ব্যবহার করা যাবে। আমি অবাক হয়ে বললাম, গাড়ির বাইরে ব্যবহার করা যাবে মানে? ছোট ভাই বললো, মনে করেন গাছে তুলে কেউ আপনার মই কেড়ে নিলো? আপনি কী করবেন? কেউ নামানোর আগ পর্যন্ত বসেই থাকবেন গাছের ডাল ধরে। এমতাবস্থায় আপনার চোখ লেগে আসতেই পারে। মানে আপনি ঘুমিয়ে পড়তেই পারেন। কিন্তু ঘুমালে তো ধড়াস করে নিচে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই এমন একটা বেল্ট থাকা জরুরি, যেটা দিয়ে গাছের সঙ্গে বডিটা বেঁধে রাখা যায়। এতে আর যা-ই হোক, যতক্ষণ না গাছ থেকে নামার ব্যবস্থা হচ্ছে, ততক্ষণ ডালে শুয়ে আরামসে ঘুমানো যাবে। আমি বললাম, বুদ্ধি খারাপ না। কিন্তু কথা হচ্ছে, গাছে তুলে মই কেড়ে নেওয়ার বিষয়টা তো খারাপ। মানুষের এই অভ্যাসটা বদলানো যায় না? ছোটভাই বললো, মনে হয় না বদলানো যাবে। মই হালকা-পাতলা জিনিস তো! সহজে হাতে নেওয়া যায়। ওঠানো যায়। অতএব মানুষ এটা কাড়তেই পারে। তবে হ্যাঁ, এই সমস্যা দূর করা যায় যদি মইয়ের মতো হালকা একটা জিনিসের পরিবর্তে ভারী জিনিস বসানো যায়। যেমন ধরেন, লিফট! ক্ষেপে যাচ্ছি টের পেয়ে সে আবার বলল, সময়টাই তো ভালো না। এই যে গাছে তুলে মই কেড়ে নেওয়ার ব্যাপারটা, এইটা কিন্তু এই সময়ে চালু হয়েছে। আগেকার সময়ে ছিল, তবে এত বেশি ছিল না। অতএব বলাই যায়, এই সময়টা ভালো না। আমি বললাম, বুঝলাম তোর কথা। ছোটভাই বললো, আমি একজনের সঙ্গে এই সমস্যাটা নিয়ে কথা বলেছিলাম। ওই লোক কী বললো জানেন? বললো গাছে তুলে মই কেড়ে নেওয়ার একটা কালচার যে এখন চালু হয়েছে, এটা থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হচ্ছে, যে লোক গাছে তুলে মই কেড়ে নেয় তাকেও আরেকটা গাছের ওপর তুলে মই কেড়ে নেওয়া! বিষে বিষ ক্ষয় চিকিৎসা!