‘ভাইয়া আপনি কবুতরকে ঠিকমতো খাবার দেন না তাই কবুতর ঘুরেফিরে আমাদের কাছেই ফেরত আসে’!
‘শুধু তোমাদেরটাই ফেরত যায়! অন্যগুলো তো ফেরত যায় না’। আমিও মুখের ওপর জবাব দিলাম।
হৃদয় খানের এমন অভিযোগ শুনে আমার মন খারাপ। খোলাসা করে বলি। অবসরে কবুতর পোষ মানাবো বলে মনঃস্থির করি। পরে চার জোড়া কবুতর কিনেছি। কিছুদিন পর কবুতর পোষ মেনে যায়। এই চার জোড়ার মধ্যে এক জোড়া কবুতর এলাকার ছোট ভাই হৃদয় খান থেকে কিনেছিলাম। অন্যগুলো বাজার থেকে কিনেছিলাম। সব কবুতর পোষ মানলেও হৃদয় খান থেকে আনা কবুতর পোষ মানল না। ছেড়ে দিলেই চলে যায় হৃদয় খানের বাসায়। এসব নিয়ে কথা চলছিল আমাদের। পাশে দাঁড়িয়ে একজন মনোযোগ দিয়ে শুনছিলেন। তিনি আমাদের প্রতিবেশী। তিনি আমাকে চোখের ইশারায় একপাশে ডেকে নিলেন। তারপর যা বললেন তাতেই ভিমরি খাওয়ার উপক্রম।
আমার কানের কাছে ফিসফিস করে বললেন, ‘হৃদয় খানের যা কিছু বিক্রি করা হয় সবকিছুই ফেরত চলে আসে। তাদের কোনো পশুপাখি কেউ আজ অবধি পোষ মানাতে পারেনি। হাঁস-মুরগি, কবুতর, গরু, ছাগল বিক্রি করার পরে তার কাছে ফেরত চলে আসার নজির রয়েছে। একবার গরু বিক্রি করার পরের রাতে কয়েক মাইল দূরে নতুন মালিকের বাড়ি থেকে দড়ি ছিঁড়ে পালিয়ে এসেছিল।
আরেকবার ফিরে এসেছিল এক ছাগল। এসব শুনে মনে মনে বললাম, ভালোই বিজনেস চালু করেছ! হৃদয় খানের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিলাম। আমার হাসি দেখে সে কী বুঝল জানি না। শুধু জবাব দিল, ‘ভাই, টেনশন নিয়েন না। কবুতররে কইয়া দিতাছি আপনার বাসাতেই যেন থাকে।’ এখন কবুতর মানুষের কথা বুঝলেই হয়!
-পূর্ব শিলুয়া, ছাগলনাইয়া, ফেনী