বুধবার, ২০ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

পৃথিবীর আকাশে জ্বলন্ত গ্রহাণুর বিস্ফোরণ

পৃথিবীর আকাশে জ্বলন্ত গ্রহাণুর বিস্ফোরণ

গত ডিসেম্বরে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ওপর বিশাল এক অগ্নিগোলকের বিস্ফোরণ ঘটেছিল, যা ছিল গত ৩০ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম বিস্ফোরণের ঘটনা। মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা বলছে, তখন এ বিস্ফোরণের ঘটনা অনেকের নজর এড়িয়ে গেছে, কারণ এটি ঘটেছিল রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপের কাছে বেরিং সাগরের ওপর। নাসা বলছে, একটি গ্রহাণু পৃথিবীর বায়ুম লের সংস্পর্শে আসার পর বিস্ফোরিত হয়। হিরোশিমায় যে পরমাণু বোমা ফেলা হয়েছিল, তার তুলনায় এই বিস্ফোরণ ছিল ১০ গুণ বেশি শক্তিশালী। নাসার প্ল্যানেটারি ডিফেন্স অফিসার লিন্ডলে জনসন বিবিসিকে জানান, এত বড় অগ্নিগোলক পৃথিবীর বায়ুম লে প্রতি ১০০ বছরে বড় জোর দুই বা তিনবার দেখা যায়। বিশ্বের বায়ুমণ্ডলে এর আগে এক ধরনের বড় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল ছয় বছর আগে রাশিয়ার চেলিয়াবিনস্কে।

যা জানা গেছে : গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর দুপুরে এ গ্রহাণু সেকেন্ডে ৩২ কিলোমিটার বেগে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে। পৃথিবীর ২৫ দশমিক ৬ কিলোমিটার ওপরে এটি বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণের সময় এর শক্তি ছিল ১৭৩ কিলোটন। এত বড় একটি বিস্ফোরণ কেন কারও নজরে পড়ল না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি ঘটেছিল বেরিং সাগরের ওপর। আর এ বিস্ফোরণের সময় এমন কোনো প্রতিঘাত তৈরি হয়নি, যা সংবাদ শিরোনাম হতে পারে। হিউস্টনে নাসার এক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে এ বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আমেরিকার মিলিটারি স্যাটেলাইটগুলো এ বিস্ফোরণ শনাক্ত করতে পেরেছিল। তারাই মূলত এ ঘটনার কথা জানায় নাসাকে। ২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস নাসাকে দায়িত্ব দেয় পৃথিবীর কাছাকাছি ঘুরতে থাকা ৯০টি অ্যাস্টরয়েড বা গ্রহাণু খুঁজে বের করার, যেগুলোর আকার ১৪০ মিটার বা তার চেয়ে বড়। কারণ এ আকারের গ্রহাণু যদি পৃথিবীতে আঘাত হানে, তা বিরাট প্রলয় ঘটিয়ে দিতে পারে।

নাসাকে এ কাজের জন্য ২০২০ সাল পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু বিজ্ঞানীদের ধারণা, এ কাজ শেষ হতে আরও অন্তত ৩০ বছর সময় লাগবে।

নাসা যখন এরকম কোনো বড় আকারের গ্রহাণু চিহ্নিত করতে পারে, তখন এটি কখন পৃথিবীর কোন জায়গায় আঘাত হানতে পারে এবং এর প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে, সেটিও তারা হিসাব করে নির্ভুলভাবে বলতে পারে। গত বছরের জুনে তিন মিটারের একটি ছোট্ট অ্যাস্টরয়েড দেখতে পায় আরিজোনার এক অবজারভেটরি। নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা তখন এটির গতিপথ নির্ভুলভাবে হিসাব কষে বের করেন। এতে দেখা যায়, এ গ্রহাণু দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে আঘাত হানবে। বাস্তবে তাই ঘটেছিল। বোতসোয়ানার একটি খামারের ওপরে গিয়ে এটি বিস্ফোরিত হয়। বিবিসি

সর্বশেষ খবর