সোমবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

শুল্কমুক্ত সুবিধা দিতে হবে

----- মোহাম্মদ আলী খোকন

শুল্কমুক্ত সুবিধা দিতে হবে

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেছেন, বস্ত্র খাতের স্পিনিং মিল কর্তৃক রিসাইকেল ফাইবার, ম্যান-মেড ফাইবারসহ সব ধরনের ফাইবারে আমদানি শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর ও অন্যান্য শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে। এসব পণ্যে আমদানির সুবিধা প্রদানসহ সংশ্লিষ্ট অশুল্ক বাধা প্রত্যাহার করতে হবে। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, টেক্সটাইল মিল কর্তৃক আমদানিকৃত ৫০ টন বা তার বেশি চিলার এইচ এস মেশিনকে পূর্বের ন্যায় মূলধনী যন্ত্রপাতি হিসেবে রেয়াতি হারে তথা ১% শুল্কায়নের মাধ্যমে আমদানির সুবিধা প্রদান করতে হবে। এই মেশিন টেক্সটাইল মিলের অত্যাবশ্যকীয় মূলধনী যন্ত্রপাতি। ইতিপূর্বে এই মেশিনে ১% শুল্কায়নে আমদানির সুবিধা ছিল। বর্তমানে এই সুবিধাটি নেই।

টেক্সটাইল ডায়িং ফিনিশিং মিলে ইটিপিতে ব্যবহৃত মেমব্রেন ও ব্লয়ার মেশিনকে শূন্য শুল্ক হারে আমদানির সুবিধা প্রদান করতে হবে। বর্তমানে সরকার পরিবেশের সুষ্ঠু রক্ষার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করেছে। সাধারণত যেসব ইন্ডাস্ট্রি ওয়েট প্রসেস করে সেখানে ইটিপি থাকা বাধ্যতামূলক। উচ্চহারে এই মেশিনের ওপর শুল্ক ও কর ধার্য থাকায় সংশ্লিষ্ট শিল্পপ্রতিষ্ঠান ইটিপি পরিচালনায় নিরুৎসাহিত হচ্ছে। যা পরিবেশ সুষ্ঠু রক্ষার বিষয়টিকে বাধাগ্রস্ত করছে।

মূল্য সংযোজন কর বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে সারা বিশ্বে রিসাইকেল ফাইবারের তৈরি পোশাকসামগ্রীর চাহিদা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে ২০ থেকে ২৫টির মতো রিসাইকেল ফাইবার তৈরির ফ্যাক্টরি গড়ে উঠেছে। মিলগুলোতে উৎপাদিত রিসাইকেল ফাইবার আঁশ যা তুলা ফর্মে তৈরি হয় তা স্থানীয় স্পিনিং মিলে সরবরাহ ও বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ধার্যকৃত ভ্যাট প্রত্যাহার করতে হবে। ফাইবারগুলো স্থানীয়ভাবে সংগ্রহের ক্ষেত্রে ফ্যাক্টরিগুলোকে ৭.৫ % ভ্যাট দিতে হয় এবং পরবর্তীতে ওই ফাইবার দ্বারা প্রস্তুতকৃত তুলা স্পিনিং মিলে সুতা তৈরির জন্য সরবরাহ করা হলে তার জন্য ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। ফলে উভয় ক্ষেত্রে ভ্যাট প্রদান করার কারণে একদিকে যেমন রিসাইকেল ফাইবারের মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে অন্যদিকে তৈরি পোশাকসামগ্রী আমদানিকৃত পণ্যের সঙ্গে মূল্য প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছে না। তাই রিসাইকেল ফাইবার তৈরি পণ্যের ব্যবহার উৎসাহিত করার স্বার্থে দ্বৈত ভ্যাট প্রত্যাহার করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, বর্তমানে পাওয়ার লুমে তৈরি কটন-গ্রে ফেব্রিককে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া আছে। অথচ কৃত্রিম আঁশের দ্বারা তৈরি ফেব্রিকের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে, যা বৈষম্যমূলক। কেননা একই প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত পণ্যের ওপর করারোপ যৌক্তিক নয়। সব প্রকার পাওয়ার লুমে উৎপাদিত কৃত্রিম আঁশের সুতার তৈরি ফেব্রিকের ভ্যাট প্রত্যাহার করতে হবে।

আয়কর ও কর বিষয়ে তিনি বলেন, টেক্সটাইল স্পিনিং মিলের মূল কাঁচামাল হচ্ছে কাঁচা তুলা, যার ৯৫ শতাংশের বেশি আমদানি করতে হয়। অনেক সময় সাময়িক চাহিদা পূরণের জন্য কতিপয় স্পিনিং মিল স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন উৎস থেকে তুলা ক্রয় করে থাকে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মিলগুলোকে ২ শতাংশ কর প্রদান করতে হয়। স্থানীয়ভাবে স্পিনিং মিল কর্তৃক ক্রয়কৃত তুলা টেক্সটাইল মিলে সুতা তৈরির জন্যই ব্যবহৃত হবে। তাই ক্রয়কৃত তুলার ওপর থেকে ২ শতাংশ কর প্রত্যাহার করতে হবে।

ফ্লাক্স ফাইবার দিয়ে উচ্চমানের সুতা তৈরি হয়। সে সুতা উন্নত মানের পোশাক  তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশে কিছু স্পিনিং মিল ওই ফ্লাক্স ফাইবার সুতা তৈরির জন্য আমদানি করে থাকে। এ পণ্যে ৫% অগ্রিম আয়কর ও ৫% শতাংশ আগাম কর রয়েছে। তা প্রত্যাহার করতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর