সরকারবিরোধী আন্দোলনের নামে বিএনপির পাকিস্তান প্রেম ও রাষ্ট্রবিরোধী আন্দোলনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।
আজ সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্ট নাগরিকদের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয়, ‘আমরা লক্ষ্য করছি সরকারবিরোধী আন্দোলনের নামে বিএনপি একের পর এক যেভাবে রাষ্ট্রবিরোধী এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিনাশী কর্মকাণ্ড করছে; এতে তরুণ প্রজন্ম শুধু বিভ্রান্ত হচ্ছে না, মুক্তিযুদ্ধের চিহ্নিত শত্রুরা উল্লসিত ও অনুপ্রাণিত হচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকে কেন্দ্র করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম প্রথমে বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ভারত থেকে কিছুই আনতে পারেননি।’ এর একদিন পর বললেন, ‘পাকিস্তান আমলে আমরা অনেক ভাল ছিলাম।’ গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিবের এ ধরনের বক্তব্য শুধু সত্যের অপলাপ নয়, বাংলাদেশকে পাকিস্তানের মতো জঙ্গি মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক ব্যর্থ রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করার ষড়যন্ত্রের অন্তর্গত।
বিবৃতিতে তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিস্ময়কর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন যেখানে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসিত হচ্ছে, এমনকি পাকিস্তানের সচেতন নাগরিক সমাজ বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের ‘রোল মডেল’ এবং পাকিস্তানকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে আখ্যায়িত করছে, সেই সময়
‘পাকিস্তান আমলে আমরা ভাল ছিলাম’, জাতীয় বক্তব্য কোনও অবস্থায় হালকাভাবে মেনে নেয়া যায় না।
’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকাল থেকে এ পর্যন্ত ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশ যে নজিরবিহীন সমর্থন ও সহযোগিতা লাভ করেছে তার প্রধান কৃতিত্ব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ ও দূরদর্শী পররাষ্ট্রনীতি। এর পাশাপাশি জামাতে ইসলামীসহ তাবৎ পাকিস্তানপ্রেমী মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক দলের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে বিএনপি যখন ক্ষমতায় থেকেছে, বাংলাদেশকে জঙ্গী মৌলবাদী সন্ত্রাসের আন্তর্জাতিক বলয়ের সঙ্গে যুক্ত করে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় পাকিস্তান বানাতে চেয়েছে।
‘পাকিস্তানপন্থী বিএনপি-জামায়াত চক্রের এ ধরনের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সতর্ক থাকার জন্য তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নির্মূল কমিটি ’৭১-এর গণহত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তান নামক দুর্বুত্ত রাষ্ট্রটির সঙ্গে প্রকাশ্য ও গোপন সকল যোগাযোগ ছিন্ন করে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের মূল্যে অর্জিত বাংলাদেশের অর্জন ও মর্যাদা হানিকর বক্তব্য থেকে বিরত থাকার জন্য বিএনপির মহাসচিবের প্রতি আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতাদের মধ্যে রয়েছেন- বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী, বিচারপতি শামসুল হুদা, বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, অধ্যাপক অনুপম সেন, নাট্যজন বীর মুক্তিযোদ্ধা রামেন্দু মজুমদার, সমাজকর্মী মালেকা খান, শিল্পী হাশেম খান, শিল্পী রফিকুননবী, সাংবাদিক আবেদ খান, অধ্যাপিকা পান্না কায়সার, অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম, ঊষাতন তালুকদার, কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন, অধ্যাপক ডা. কাজী কামরুজ্জামান, ক্যাপ্টেন (অব.) আলমগীর সাত্তার বীরপ্রতীক, ক্যাপ্টেন (অব.) সাহাবউদ্দিন আহমেদ বীরউত্তম, চলচ্চিত্রনির্মাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দীন ইউসুফ, প্রাক্তন আইজিপি মোহাম্মদ নূরুল আনোয়ার, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. আমজাদ হোসেন, মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আবদুর রশীদ (অব.), মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদার (অব.), বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরুন নবী, লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, শহীদজায়া সালমা হক, কলামিস্ট সৈয়দ মাহবুবুর রশিদ, শিক্ষাবিদ মমতাজ লতিফ, অধ্যাপক শিল্পী আবুল বারক আলভী, সমাজকর্মী কাজী মুকুল ও অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত