সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমেরিকানদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানে উৎসবমুখর পরিবেশে গতকাল ৪ জুলাই শনিবার আমেরিকার ২৩৯তম স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়েছে। আইএসআইএস’র সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কার মধ্যে কঠোর নিরাপত্তায় সর্বত্র প্যারেড, আতশবাজি এবং দেশীয় গানের সমন্বয়ে বর্ণাঢ্য সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ রকম অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলার হুমকির সামান্য সংশয় ছিল না স্বাধীনতার চেতনায় উজ্জীবিত আমেরিকানদের মধ্যে। তবে প্রতিটি অনুষ্ঠানের আশপাশ এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল।
দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, ‘আজকের এ দিনে আমি এবং মিশেল ওবামা সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, যারা প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে আমাদের স্বাধীনতাকে অটুট রাখতে, আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখতে সোচ্চার রয়েছেন। আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি, আমাদের সামরিক বাহিনীর পরিবারের প্রতি, যুদ্ধ ফেরত সৈনিকদের প্রতি।’
‘আপনারা (যুদ্ধ ফেরত সৈনিক এবং সামরিক বাহিনী) ব্যতিত আমরা কখনোই বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাশালী রাষ্ট্রে পৌছাতে সক্ষম হতাম না। আপনারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন বলেই আমেরিকা ক্রমান্বয়ে বিশ্বের নেতৃত্বে আসীন হয়েছে’- বলেন ওবামা।
‘আমেরিকা আরো সমৃদ্ধশালী হউক’, ‘নেতৃত্ব প্রসারিত হউক’, ‘সৃষ্টিকর্তা-আমেরিকার প্রতি আশির্বাদ করো’-এমন শ্লোগানে মুখরিত পরিবেশে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সবচেয়ে বড় ও ব্যয়বহুল অনুষ্ঠান হয় নিউইয়র্ক সিটিতে। বিশ্ববিখ্যাত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ‘ম্যাসি’র উদ্যোগে ইস্ট রিভারে বর্ণাঢ্য এবং চোখ ধাঁধানো আতশবাজির মধ্য দিয়ে ১০ লক্ষাধিক আমেরিকান স্বাধীনতা দিবস পালন করেন। ২৫ মিনিট স্থায়ী এ আতশবাজিতে ব্যবহৃত হয় ৫০ হাজার পাইরোটেকনিক শেল। মাঝনদীতে সামান্য দূরত্বে অবস্থান নেয়া ৪টি বার্জ থেকে স্বাধীনতার চেতনার পরিপূরক সঙ্গীতের তালে মধ্য আকাশে এসব শেল নিক্ষেপ করার পর তা বিভিন্ন রঙে নানা দৃশ্যের অবতারণা করে। এ সময় সামরিক বাহিনীর বাদ্য দল সকলকে মোহিত করে দেশাত্মবোধক সঙ্গীতের সুর তোলেন।
আইএসআইএস সন্ত্রাসী হামলা চালাতে পারে-এ আশঙ্কায় নিউইয়র্ক সিটির সর্বত্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। স্বাভাবিক টহলের বাইরে কাউন্টার টেররিজম ফোর্সের এক হাজার সদস্যকে নিয়োগ করা হয় সিটির গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে। সাদাপোশাকেও ছিলেন অনেকে।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাশনাল মলে প্যারেড এবং আতশবাজির উৎসব হয়। লসঅ্যাঞ্জেলস, টেক্সাস, সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা, ফিলাডেলফিয়া, নিউঅর্লিন্স, বস্টন, নিউজার্সি, নর্থ ক্যারলিনা, ভার্জিনিয়াতেও বর্ণাঢ্য প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়।
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানসমূহে বাংলাদেশি-আমেরিকানরাও ছিলেন সরব। আমেরিকার পতাকা হাতে কিংবা জাতীয় পতাকার শার্ট অথবা টি শার্ট পরে তারা প্যারেডে যোগদান করেন। রোজাদার অনেককেই ইস্ট রিভারের আতশবাজির উৎসবে দেখা যায় এবং তারা মানুষের ভীড়েই ইফতার সেরে নেন।
বিডি-প্রতিদিন/০৫ জুলাই, ২০১৫/মাহবুব