মহল্লার স্বঘোষিত কবি মানিক। তার বই বিক্রি হয় না। তার সমসাময়িক লেখক বন্ধুরা প্রতিদিন মেলার পেছনে বসে আড্ডা জমায়। কে এবারের বেস্টসেলার, কার বই কিনতে পাঠক লাইন ধরেছে এসব নিয়েই আলাপ হয়। বন্ধুরা জিজ্ঞেস করে, ‘কিরে মানিক, তোর বই কত বিক্রি হলো?’ সে কাঁধ নাচিয়ে রহস্যময় হাসি হাসে। এই হাসির অর্থ একশো কপিও হতে পারে আবার এক কপিও হতে পারে। কিন্তু নিজে তো জানে, বই একটাও বিক্রি হয়নি। মানিক খারাপ লিখে না। ফেসবুকে কবিতা লিখে পোস্ট দিলে পোস্ট প্রতি তেরো থেকে চৌদ্দখানা লাইক সে পায়। গড়ে তিনজন ‘স্যার, লেখাটি খুব সুন্দর হয়েছে’ বলে কমেন্ট করেন। যদিও এদের মধ্যে দুইটাই মানিকের নিজের ফেক আইডি। একটি এঞ্জেল কাব্য অপরটি নীলপরী নীলাঞ্জনা। সে যাই হোক, মানিকের দুশ্চিন্তা তার বই কেন বিক্রি হয় না। ফেসবুকে তার বন্ধু সংখ্যা পাঁচ হাজার। অন্তত পাঁচশ কপি তো হেসেখেলে চলে যাওয়ার কথা! কিন্তু একটাও হচ্ছে না। মেলার স্টলে অবস্থানকারী বিক্রয়কর্মীদের প্রতি ঘণ্টা অন্তর অন্তর সে জানতে চায়, ‘কয়টা গেল?’ প্রতিবার একই উত্তর ভেসে আসে, ‘একটাও না’। মানিকের বিশ্বাস হয় না। নিশ্চয়ই ওরা মিথ্যা বলছে। সে তার বাল্যবন্ধুকে পাঠক সাজিয়ে খোঁজ করতে পাঠায়। কৌশলে জানতে চায়, আচ্ছা, কবি মানিকের বই কেমন চলছে? বিক্রয়কর্মী বিরস বদনে বলে, ‘গত পনেরো দিনে এই প্রথম কেউ উনার বইয়ের কথা জানতে চাইল, কিনবেন?’ বন্ধু বই কিনে না। টাকা নষ্ট করার মানে হয় না। মানিকের মন খারাপ হয়। মেলাভর্তি এত এত মানুষ, একজনও কি নেই যে তার বই কিনতে চায়? কয়েকজন যে চায় না তেমনটি নয়। গতপরশু এক তরুণী তার বইখানা হাতে তুলে নেড়েচেড়ে দেখছিল। মানিকের তো দম বন্ধ হওয়ার দশা! কিনবে তো? মোবাইল ক্যামেরা প্রস্তুত রেখে আড়চোখে সে বারবার তরুণীটিকে দেখছিলেন। বইটি কিনলেই খট করে ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়ে দেবে। কিন্তু না। তরুণী বই দেখল, ভিতরের কয়েক পাতা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পড়েও ফেলল। তারপর সুন্দর করে যেখানে সাজানো ছিল সেখানে বইটি সাজিয়ে রেখে চলে গেল! অদ্ভুত! কিনবে না তো পড়ল কেন! মানিকের বড্ড অভিমান হয়। আড্ডায় বন্ধুরা আবার তাকে জিজ্ঞেস করবে ‘কত কপি বিক্রি হলো?’ তাকে তখন আবারও রহস্যময় হাসি হাসতে হবে। এঞ্জেল কাব্য কিংবা নীলপরী নীলাঞ্জনা দিয়ে আবার কমেন্ট চালাচালি করতে হবে। মানিক লুকিয়ে লুকিয়ে মেলায় যায়। আড়ালে-আবডালে স্টলের কোনায় দাঁড়িয়ে বড় আশা নিয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘কয়টা গেল?’ রাতে বাসায় ফিরে কাগজ কলম নিয়ে মানিক লিখতে বসে। আগামী মেলার জন্য সে আবার বই লেখা শুরু করেছে, বইয়ের নাম ঠিক করেছে, ‘বইটি বিক্রি হয়নি।’ আগামীবার তার বই বিক্রি হোক আর না হোক, সে বড় গলায় বলতে পারবে, তার বই বিক্রি হয়নি।
শিরোনাম
- সাড়ে ৯ ঘণ্টা পর ঢাকা-ময়মনসিংহে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
- নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে খালেদা জিয়া
- সাদিয়া আয়মানের অভিনয়ে মুগ্ধ অনিরুদ্ধ রায়
- গাইবান্ধা কারাগারে অসুস্থ হয়ে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু
- আদাবরের শীর্ষ ছিনতাইকারী ‘চোরা রুবেল’ গ্রেপ্তার
- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
- শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌঁছে দিতে বিভাগীয় শহরে বাস দিল জবি
- ভূমিকম্প অনিশ্চিত তাই বিদ্যালয় বন্ধের সুযোগ নেই: প্রাথমিক শিক্ষা উপদেষ্টা
- ঢাকা মেডিকেলে একাডেমিক কার্যক্রম আগামী ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ
- বাগেরহাটে ৩ বান্ধবীকে শ্লীলতাহানি ও একজনকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা
- হাসিনা-কামালকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি দেওয়া হয়েছে : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
- পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ কার্নিভাল-৩ অনুষ্ঠিত
- নভেম্বরের ২২ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২১৩ কোটি ডলার
- ফ্যাসিজম সহ্য করা হবে না, নিজেরাও ফ্যাসিষ্ট হবো না: তানিয়া রব
- বন্ধ কারখানা চালুর দাবিতে শ্রমিকদের মানববন্ধন
- ৮১ দেশি পর্যবেক্ষকের সঙ্গে ইসির সংলাপ ২৫ নভেম্বর
- ‘ফ্যামিলি ম্যান থ্রি’: মনোজ নয়, জয়দীপের সিজন?
- টিকটক ইউজারদের জন্য চালু হলো টাইম অ্যান্ড ওয়েল-বিয়িং ফিচার
- পটুয়াখালীতে হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন
- বাংলাদেশের কাল ব্রুনাই চ্যালেঞ্জ