সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অধিকাংশ মানুষের মতো এক সময় শুধু কৃষি শ্রমিকের কাজ করে জীবিকানির্বাহ করতেন তারা। বছরের ৬-৭ মাস কাজ না থাকায় অন্যদের মতোই বাড়িতে অবসর সময় কাটত তাদের। তবে গত ৩-৪ বছরে পাল্টে গেছে সেই গল্প। সংসারের অন্যান্য কাজ সেরে এখন তারা সারা বছরই ডরম্যাট বা পাপোশ বানানোর কাজে ব্যস্ত থাকেন। এতে বেশ বাড়তি আয় হচ্ছে। সংসারে আসছে সচ্ছলতা। এখন এই পাপোশ বানানোর কাজই হয়ে উঠেছে এসব অভাবি নারীদের জীবিকার অবলম্বন।
বদলে যাওয়ার এই গল্প নওগাঁর মহাদেবপুরের জোয়ানপুর, মগলিসপুর, স্বরূপপুর, এনায়েতপুর, ঋষিপাড়া, উড়াওপাড়া, পত্নীতলা উপজেলার হাসানবেগপুর, দক্ষিণ কাশপুরসহ বেশ কিছু গ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নারীদের। চার বছর আগে মহাদেবপুর উপজেলার ১০-১২ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নারী পল্লী সহযোগী বিষয়ক সংস্থা (আরকো) নামের স্থানীয় একটি উন্নয়ন সংস্থার প্রকল্পে পাপোশ তৈরির প্রশিক্ষণ পেয়ে নিজ বাড়িতে উৎপাদন শুরু করেন। পরে প্রশিক্ষণ পাওয়া ওইসব নারীর কাছ থেকে কাজ শিখে আরও অনেক নারী পাপোশ বানিয়ে নিজেদের ভাগ্য বদলেছেন। আরকো বিদেশি উন্নয়ন সংস্থা হেকস-ইপারের সহায়তা নিয়ে দলিত-আদিবাসী রাইটস এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড একসেস টুয়ার্ডস মেইস্ট্রিম-ড্রিম প্রকল্পের আওতায় মহাদেবপুর, পত্নীতলা ও বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলায় ২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৬৫ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও দলিত নারী পাপোশ তৈরির প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। ড্রিম প্রকল্পের ব্যবস্থাপক প্রদেশ ভট্টাচার্য জানান, ড্রিম প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ পাওয়া ৬৫ নারীর কাছ থেকে কাজ শিখে বর্তমানে মহাদেবপুর ও পত্নীতলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাপোশ তৈরির কাজে সম্পৃক্ত রয়েছেন প্রায় এক হাজার নারী। নিজেদের পরিশ্রমের উপার্জিত অর্থে বদলে গেছে তাদের জীবনমান।