দ্বিতল বাস। বাসের ওপরের ছাদ খোলা। বসে-দাঁড়িয়ে প্রকৃতি অবলোকন। মুক্ত হাওয়ায় অবগাহন। প্রকৃতি দর্শন করে করে প্রাকৃতিক নৈসর্গগুলোর আলিঙ্গন। কখনো বায়েজিদ লিংক রোড, কখনো ফৌজদারহাট মেরিন ড্রাইভের মতো নয়নাভিরাম দৃশ্য দর্শন। এ যেন নির্মল আনন্দের অনিন্দ্য-বর্ণিল অনুষঙ্গ। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চালু করা ‘পর্যটক বাসে’ এমন অমলিন আনন্দ উপভোগ করছেন। প্রতিদিনই বাড়ছে উৎসুখ-আগ্রহী যাত্রীর সংখ্যা। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের উদ্যোগে পর্যটক বাস চালু করা হয়। এটি দেশে প্রথম উদ্যোগ।
জানা যায়, গত ১০ জুন থেকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চালু করা হয় পর্যটক বাস। নগরের টাইগারপাস থেকে ফৌজদারহাট ডিসি পার্ক হয়ে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে প্রথম দিকে দুটি ডাবল ডেকার বাস (একটি ছাদ খোলা) চালু করা হয়। বাসগুলো প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত থেকে দুটি করে চারটি ট্রিপ আসা-যাওয়া করে। তবে শুক্র-শনিবার যাত্রী বৃদ্ধির কারণে তিনটি করে ট্রিপ যাতায়াত করে।
পর্যটক বাসের যাত্রী তাহমিনা শারমীন বলেন, চমৎকার একটা আয়োজনে পরিবার নিয়ে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত ঘুরে এলাম। সুন্দর উদ্যোগটির জন্য জেলা প্রশাসন প্রশংসার দাবিদার।চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. আবদুল মালেক বলেন, চট্টগ্রামের প্রধানতম আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত। কিন্তু এখানে যাওয়ার সরাসরি কোনো বাস সার্ভিস ছিল না। ফলে নানাভাবে ভোগান্তি পোহাতে হতো পর্যটন যাত্রীদের। বিষয়টি বিবেচনা করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের সহায়তায় পর্যটক বাস চালু করা হয়। চালুর পরই এটি বেশ সাড়া ফেলেছে। প্রতিনিয়তই পর্যটক যাত্রী বাড়ছে। আগামীতে বাসের সংখ্যাও বাড়ানো হবে। পর্যটক বাসের সমন্বয়কারী জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা জামশেদ আলম রানা বলেন, পর্যটক বাস চালু জেলা প্রশাসকের একটি সৃষ্টিশীল উদ্যোগ। এর মাধ্যমে মানুষ পরিবার নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে সমুদ্রসৈকত, ডিসি পার্কসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকা অবলোকন করতে পারছেন। পর্যটনযাত্রীরা খোলা ছাদের বাসটি বেশ উপভোগ করছেন। এর মাধ্যমে রাজস্বও বাড়বে।
জানা যায়, নামমাত্র মূল্যে পর্যটক বাসের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। টাইগার পাস থেকে ডিসি পার্ক ভাড়া ৪০ টাকা, ডিসি পার্ক থেকে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত ৩০ টাকা। টাইগার পাস থেকে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত ৭০ টাকা। ছাদখোলা ডাবল ডেকার বাসের ধারণক্ষমতা ৫৫ জন এবং অন্যটির ধারণ ক্ষমতা ৭৪ জন। প্রতিদিন ২৫৮ জন যাত্রী যাতায়াত করছেন। চালুর পর থেকে ১৫০টি ট্রিপে ১৯ হাজার ৮০৮ জন যাত্রী পরিবহন করে। পর্যটকদের চাহিদার প্রেক্ষিতে নয়নাভিরাম আঙ্গিক দেওয়া হচ্ছে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতকে।