যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বৃহত্তর চট্টগ্রামবাসীর প্রতিনিধিত্বকারী ও বাংলাদেশিদের অন্যতম শীর্ষ সংগঠন ‘গ্রেটার চট্টগ্রাম অ্যাসোসিয়েশন ইউকে (জিসিএ)’ পঞ্চমবারের মতো মিলনমেলার আয়োজন করেছে। এ সংগঠনটি প্রথমবার প্রবাসে চট্টগ্রামের মেজবানকে ভিন্ন আমেজে পরিচিত করেছে। মেজবান এখন দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও বেশ জনপ্রিয়। মিলনমেলায় আলাদা গুরুত্ব পেয়েছে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান। পরবাসে সাদা ভাত, গরুর মাংস আর ডালের ভোজ আয়োজন যে কতটা উৎসবমুখর হয়ে উঠতে পারে তার প্রমাণ মিলল ঐতিহ্যবাহী মেজবান আয়োজনে।
৭ জুন রবিবার পূর্ব লন্ডনের মেফেয়ার হলে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে মেজবানি খাবারের পাশাপাশি ছিল মনমাতানো সাংস্কৃতিক আয়োজন। পিঠা উৎসব, বৈশাখী মেলা কিংবা বাঙালির বিয়ের মতো জমজমাট আয়োজন এখন নিয়মিত দেখা যায় সেখানে। ৩ হাজার মানুষ মেজবানে অংশ নেয়। এদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চলে এই মিলনমেলা।
বক্তব্য রাখেন সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী, ১০৪ বছর বয়সি চ্যারিটি ফান্ড রেইজার দবিরুল ইসলাম চৌধুরী, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ট্রাস্টি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষে ইসমাঈল হোসেন, সাবেক সভাপতি ইসহাক চৌধুরী, ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দিন, কাউন্সিলর সৈয়দ ফিরোজ গনী প্রমুখ। এ সময় মঞ্চে নানা পর্বের সঞ্চালনায় ছিলেন মোহাম্মদ কায়সার, মাসুদুর রহমান, শহিদুল ইসলাম সাগর, নূরুন্নবী আলী, শহিদুল ইসলাম সাগর, ডা. মিফতাহুল জান্নাত। অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন মীর রাশেদ আহমেদ, শওকত মাহমুদ টিপু, আরশাদ মালেক, আলী রেজা, রাজ্জাকুল হায়দার বাপ্পী, হাসান আনোয়ার প্রমুখ।
আয়োজনটি চট্টগ্রামবাসীর হলেও যুক্তরাজ্যে বসবাসরত অন্য অঞ্চলের বাংলাদেশিরাও এতে অংশ নেয়। লন্ডনের আশপাশের শহরসহ স্কটল্যান্ড, ম্যানচেস্টার, বার্মিংহামের মতো দূরের শহরগুলো থেকেও অনেক চট্টগ্রামবাসী আসেন ঐতিহ্যবাহী এ আয়োজনে যোগ দিতে। দিনব্যাপী মেজবানি খাবারের পাশাপাশি চলে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আঞ্চলিক গান, নাচ ও নানা ধরনের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ফকির শাহাবুদ্দিন, হিমাংশু গোস্বামী, পাঞ্জাবিওয়ালা খ্যাত শিরিন জাওয়াত, আতিক হাসান, লাবণী বড়ুয়া, এম এ মোস্তফা, তাহমিনা শিপু, আই অন বাংলা স্কুল, পার্পল নাইট ব্যান্ডের জাওয়াদ, রুবেল, জয়, নাবিল, আয়ুস সাহাসহ স্থানীয় শিল্পীরা। কৌতুক পরিবেশন করেন মিরাক্কেল কমেডিয়ান আরমন। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ট্রাস্টি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা চট্টগ্রামবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করে নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্যই এই মেজবানের আয়োজন। চট্টগ্রামবাসীসহ অন্যান্য জেলার লোকদের মধ্যে এবারের মেজবান যে সাড়া ফেলেছে, তাতে ভিড় সামলাতে হয়তো ভবিষ্যতে খোলা কোনো মাঠে এই আয়োজন করতে হবে।’ কার্যকরী কমিটির সভাপতি আকতার আলম ও সাধারণ সম্পাদক ওসমান ফয়সাল অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে ধন্যবাদ জানান।