ভারত ও পাকিস্তান দুই প্রতিবেশী চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ। কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর দুই দেশ জড়িয়ে পড়েছে যুদ্ধে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশের যুদ্ধে অশান্ত হয়ে উঠেছে দুই দেশ। চিন্তার ভাঁজ পড়েছে প্রতিবেশী দেশগুলোর কপালে। যুদ্ধের জোর ধাক্কা লেগেছে খেলাধুলায়। ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা বিবেচনায় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড স্থগিত করেছে আইপিএল। পাকিস্তানের পিএসএলও স্থগিত হয়ে গেছে। প্রথমে আরব আমিরাতে হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত করেছে পিসিবি। দুই প্রতিবেশীর যুদ্ধের ঢেউ আছরে পড়েছে বাংলাদেশের পাকিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সিরিজের ওপর। লিটন দাসের নেতৃত্বে টাইগারদের দুই দেশে ৭টি টি-২০ ম্যাচ খেলতে যাওয়ার কথা। টাইগারদের প্রথম সফর আমিরাতে এবং এরপর পাকিস্তানে। কিন্তু যুদ্ধের জন্য সিরিজ দুটির ভবিষ্যৎ সংশয়াচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ সিরিজ দুটি খেলতে আমিরাত ও পাকিস্তান যাবে? এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বিসিবির বেশ কয়েকজন পরিচালক আজ জুম মিটিংয়ে বসবেন। সফরের নিরাপত্তার বিষয়ে বিশদ আলোচনা করবেন। যুদ্ধের পরিস্থিতি যদি আরও জটিল হয়, তাহলে হয়তো সিরিজ দুটি স্থগিত হয়ে যেতে পারে। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ সিরিজ দুটির ভবিষ্যৎ নিয়ে বলেন, ‘আমরা যুদ্ধের দিকে নজর রাখছি। ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সিরিজ শুরুর কথা ২৫ মে। এখনো অনেক দিন বাকি। সেজন্যই আমরা যুদ্ধ পরিস্থিতির দিকে খেয়াল রাখছি। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে বিসিবি একটি সিদ্ধান্তে আসবে। তবে পরিস্থিতি যেদিকে গড়াচ্ছে, তাতে সিরিজের ভবিষ্যৎ দিন দিন কমে যাচ্ছে।’
বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজ হবে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিবির একজন পরিচালক এমনটাই জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ দিনদিন যে পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে, তাতে সিরিজ স্থগিত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ। কেননা ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা সবার আগে।’ পিএসএল শেষ না করে বিশেষ বিমানে দেশে ফিরছেন টাইগার দুই ক্রিকেটার রিশাদ হোসেন ও নাহিদ রানা এবং টুর্নামেন্ট কাভার করতে যাওয়া দুই ক্রীড়া সাংবাদিক। পিএসএলে নাহিদ রানা খেলছেন পেশোয়ার জালমির পক্ষে এবং রিশাদ খেলছেন লাহোর কালান্দার্সের পক্ষে।
মরুশহর শারজাহতে লিটন বাহিনীর দুটি টি-২০ খেলার কথা ১৭ ও ১৯ মে। আমিরাতে সিরিজ শেষে ২১ মে ৫ ম্যাচের টি-২০ সিরিজ খেলতে পাকিস্তান সফরে যাওয়ার কথা লিটন, নাজমুলদের। সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচ ফয়সালাবাদে ২৫, ২৭ ও ৩০ মে এবং শেষ দুটি ম্যাচ হওয়ার কথা লাহোরে ১ জুন ও ৩ জুন।
পাকিস্তানের সিরিজটি মরুরাজ্যে আয়োজনের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু পিএসএলের অবশিষ্ট খেলাগুলো আমিরাতে অনুষ্ঠিত হবে। সেজন্য শিডিউলে রদবদল হতে পারে। পিএসএলের খেলা ১৮ মে পর্যন্ত। পিএসএলের খেলা মরুরাজ্যে অনুষ্ঠানের কথা থাকায় হয়তো বাংলাদেশ-আমিরাতের টি-২০ সিরিজটি নাও হতে পারে। পিএসএলের অন্যতম ভেন্যু রাওয়ালপিন্ডিতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ভারত। এরপরই খেলা স্থগিত করে দেয় পিসিবি। টুর্নামেন্টের ফাইনাল ১৮ মে। এখনো খেলা বাকি ৮টি। খেলাগুলো আমিরাতে আয়োজনের কথা। ধর্মশালায় খেলা পাঞ্জাব কিংস-দিল্লি কাপিটালসের ম্যাচ চলাকালীন ব্ল্যাকআউট হয়। এরপরই এক সপ্তাহের জন্য খেলা বন্ধ করে দেয় আয়োজকরা।
দুই দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বড় টুর্নামেন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যুদ্ধের পরিস্থিতি যে জটিল, সেটা স্পষ্ট। দুই টুর্নামেন্টের বিদেশি ক্রিকেটাররা নিজেদের অবস্থান নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। ক্রিকেটারদের নিরাপত্তার কথা ভেবে দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ড টুর্নামেন্ট স্থগিত করেছে। বিসিবিও চিন্তিত ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা নিয়ে। সেজন্যই বারবার পিসিবির কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ কথা বলেছেন পিসিবির সভাপতি ও সিইও-এর সঙ্গে।